বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গণসংবর্ধনায় যোগ দিতে প্রস্তুত সিলেট সিলেট বিভাগের চার জেলার ৪০ উপজেলা ও ২০ পৌরসভার নেতাকর্মী ছাড়াও সমর্থকরা। বাদ পড়ছেন না তারেক রহমানের শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজনও। পরিবহণের জন্য একটি স্পেশাল ট্রেন, বুধবার সিলেট-ঢাকা রুটের সব ট্রেনে রিজার্ভ করা অতিরিক্ত ৪-৫টি করে বগি ছাড়াও সড়ক পথে প্রায় ৪শ গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর বাইরে প্রাইভেট গাড়িও রয়েছে শতাধিক।
সিলেট-ঢাকা রুটের ফ্লাইটগুলোর বিমানের টিকেট ও বুকড। তার পরও পরিবহণ সমস্যার কথা ভেবে মঙ্গলবার বেশকিছু নেতাকর্মী নিজেদের দায়িত্বে ঢাকায় চলে যান। সংবর্ধনাকে ঘিরে সিলেট বিভাগের বিএনপিতে অভূতপূর্ব রাজনৈতিক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। যা আগে কখনো চোখে পড়েনি।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা জানান, তারেক রহমানের সংবর্ধনাকে সামনে রেখে বুধবার সিলেট-ঢাকা রুটের ট্রেনে ও সড়ক পথের প্রায় ৫শ যানবাহনে ঢাকা অভিমুখে রওয়ানা দেবেন সিলেট বিভাগের বিএনপি নেতাকর্মীরা। সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার ৪০টি উপজেলা এবং ২০টি পৌরসভার নেতাকর্মীরা এসব যানবাহনে ঢাকায় পৌঁছাবেন। নেতাকর্মীরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় এবং ঢাকায় তাদের থাকা-খাওয়ার সমস্যার কথা চিন্তা করে যানবাহনগুলো স্ট্যান্ডবাই করা হয়েছে। যাতে সংবর্ধনা শেষে ওসব গাড়িতে করেই তারা সিলেটে ফিরতে পারেন।
তারা জানান, জেলা, উপজেলা বা পৌরসভা নয় ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি তৃণমূলের ওয়ার্ড-ইউনিট থেকে নেওয়া হয়েছে। মহানগর, জেলা, পৌর ও উপজেলা কমিটিগুলো সমন্বয় করছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গৌছ যুগান্তরকে জানান, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলা ও ৬টি পৌরসভার নেতারা মহাসড়কে কয়েকশ যানবাহনে মহড়া দিয়ে ঢাকা পৌঁছাবেন। ১শ বাস বুক করা হয়েছে, এর বাইরে প্রাইভেট আরও একশর মতো গাড়ি যাবে।
তিনি বলেন, কাউকে আটকানোর ক্ষমতা নেই, সবাই যেতে চায়।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী যুগান্তরকে জানান, প্রথমে ২শ পরে আরও একশসহ মোট তিনশ বাস বুক করেছি। এতেও কোনো কূল কিনারা করতে না পারায় একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছি। এর বাইরে সিলেট-ঢাকামুখি ট্রেনগুলোতে ৪-৫টা করে রিজার্ভ বগি লাগানো হচ্ছে। এছাড়াও প্রায় দুশ প্রাইভেট গাড়ি যাবে। মনে হচ্ছে ঢাকার সংবর্ধনাস্থল সিলেটিদের জনসমুদ্রে রূপ নেবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন মিলন যুগান্তরকে জানান, সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভা থেকে নেতাকর্মীরা প্রস্তুত। সড়ক ও নৌপথে রওনা দেওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী যুগান্তরকে জানান, বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের নেতাকর্মীরা ঢাকায় তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তবে থাকবেন না, সমাবেশ শেষেই ঢাকায় ফিরবেন।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন যুগান্তরকে জানান, জেলার ৭টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার সবাই ঢাকামুখি। আপাতত শখানেক গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। এতেই শেষ নয়, তারেক রহমানের শ্বশুরবাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। ওখানের বাসিন্দারা দলমত নির্বিশেষে তাদের জামাইয়ের সংবর্ধনা দেখতে যেতে চান। তারা দলীয় গাড়ির ভরসা না করে নিজেরাই গাড়ির ব্যবস্থা করেছেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি শুধু নয়, বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন গুলোর সকল ইউনিটকে হিসাবে আনুন। সিলেট থেকে যে পরিমাণ যানবাহন ও নেতাকর্মী যাচ্ছেন তা অতীতের সব ইতিহাস ভঙ্গ করবে।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে জানান, সিলেট-ঢাকা ও ঢাকা-সিলেট দুটি রুটের টিকেট নেই বললেই চলে। অনেকেই টিকেটের জন্য ফোন করছেন।
সব মিলিয়ে বিভাগের ৪০টি উপজেলা ও ২০টি পৌরসভার প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিট থেকে কয়েক লক্ষ নেতাকর্মী এখন ঢাকামুখি। তাদের উপস্থিতিতে ঢাকার ৩০০ ফিট এলাকা এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে বিএনপি নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপির অন্যান্য নেতারা বলেন, সিলেটবাসীর কাছে তারেক রহমান শুধু নেতা নয়, তাদের আদরের-গর্বের জামাই। এবারের সংবর্ধনায় জনসমুদ্র সৃষ্টি করে সিলেটিরা তার প্রমাণ দেবে। তারা বলেন, আবেগী লোকজনদের আটকানো কঠিন। অনেকেই দুদিন আগে গিয়ে ঢাকায়, সংবর্ধনার অপেক্ষায়।
দলের দায়িত্বশীলরা জানান, তারেক রহমানের বিমান প্রথমে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। তবে তিনি সিলেটে নয়, ঢাকায় নামবেন।