Image description

ক’দিন আগে সিলেট নগরের উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি সিলেট-১ আসনের বিএনপি’র প্রার্থী। বিগত সরকার নগরে তেমন কোনো উন্নয়নই করেনি বলে দাবি করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের বেশির ভাগ সময়ই নগরের মেয়র ছিলেন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এজন্য তিনি মেয়রকে দুষেন না। তার কাঠগড়ায় বিগত সরকার। এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনের প্রার্থী হিসেবে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের দিকে নজর সবার। পাস করলে উন্নয়নের চাবি থাকবে তার হাতে। এজন্য মুক্তাদির কী বলছেন, কী করছেন কিংবা তার পরিকল্পনা কী- এসবের দিকে ভোটারের নজর বেশি। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই প্রার্থী খন্দকার মুক্তাদিরও। হাঁটছেন, যাচ্ছেন মানুষের কাছাকাছি।

এরইমধ্যে তিনি সিলেটবাসীর প্রতি একটি প্রশ্ন ছুড়েছেন- ‘কেমন সিলেট চান।’ মতামত নিতে চান মানুষের। এতে মিলছে সাড়াও। তফসিল ঘোষণার আগে মুক্তাদির এক দফা চষে বেড়িয়েছেন তার নির্বাচনী আসন। বলতে গেলে পাড়া কিংবা সবখানেই গেছেন তিনি। কথা বলেছেন মানুষের সঙ্গে। এরইমধ্যে ধারণা মিলেছে সিলেট উন্নয়নের। কী করা প্রয়োজন- এ ব্যাপারে নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি প্রাথমিক কিছু পরিকল্পনা জানিয়েছেন। তার এ পরিকল্পনার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দিক উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে- অবারিত আকাশপথ, গতিশীল রেলপথ ও সহজ মাধ্যমের সড়ক যোগাযোগ। খন্দকার মুক্তাদির জানান, সিলেটের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টির অভাব। পাথর কোয়ারি, ব্রিক ফিল্ড ও পরিবহন খাত ছাড়া সিলেটে বড় কোনো কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র নেই। এ কারণে সিলেটের তরুণরা বিদেশমুখী হয়েছেন। 

আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সরকারি নীতি সহায়তায় সিলেটে নতুন শিল্প স্থাপনের পাশাপাশি তরুণদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে উৎসাহিত করা হবে। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান খাল খনন কর্মসূচি, স্বল্পমূল্যে বীজ ও সার প্রদান, কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সিলেটের এক ফসলি জমিকে দুই ফসলিতে উন্নীত করেছিলেন। ফলে সিলেটে উৎপাদন বেড়েছিল, হাজার হাজার একর অনাবাদী জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছিল। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ আমলে সিলেটের কৃষি খাতের উন্নয়নে কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সিলেটের কৃষির উন্নয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। সিলেটের নাগরিক সমস্যাগুলো ‘প্রকাশ্য ও চিহ্নিত’ উল্লেখ করে মুক্তাদির বলেন, কোন কসমেটিক উন্নয়ন নয়, সিলেট নগরবাসীর সমস্যাগুলোর স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। বিশেষ করে নগরীর যে সব স্থানে জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে, সেসব সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। 

সুরমা নদীর দুই তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে নদীভাঙনের সমস্যা নিরসন করা হবে। নগরীতে মাদক ও অনলাইন জুয়াকে চিরতরে নির্মূল করা হবে উল্লেখ করে খন্দকার মুক্তাদির বলেন, নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা ও কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে পারলেই সিলেট একটি প্রকৃত উন্নত জনপদ হতে পারে। তিনি সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে তার কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দক্ষিণ এশিয়ার একটি বিমান যোগাযোগের ‘হাব’ হিসেবে গড়ে ওঠার দাবি রাখে। পার্শ্ববর্তী দেশের সেভেন সিস্টারও এই বিমানবন্দর থেকে সুবিধা নিতে পারে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে সকল আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। জরুরি ভিত্তিতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের উন্নয়নের কাজ শেষ করাসহ সিলেট-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সিলেটের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগকে ‘এ ক্লাস’-এ উন্নীত করা হবে। যোগাযোগের উন্নয়ন নিশ্চিত করা গেলেই সিলেটে দেশি বিনিয়োগ আসবে, পর্যটন খাতেরও বিকাশ হবে বলে মনে করেন তিনি।