দেশের নির্বাচনমুখী দলগুলো এ মুহূর্তে পাঁচটি জোটে বিভক্ত। গতকাল রোববার আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সম্মিলিত জোট- গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট। । বিএনপির কাছ থেকে আসনের আশ্বাস না পাওয়া রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন গণতন্ত্র মঞ্চ ছেড়ে এই জোটে এসেছে। আসন না পাওয়া আরও কয়েকটি দল আসতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে । নিজেরা পৃথক জোট করলেও বিএনপি অথবা জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার পথ খোলা রেখেছে এনসিপি।
এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নিয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট এককভাবে ৩০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা বললেও এ জোট শেষ পর্যন্ত বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতায় যেতে পারে বলে আলোচনা আছে।
নতুন জোটের সূত্র জানিয়েছে, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদকে জোটভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েনে বিএনপির সঙ্গ ছেড়ে আসা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জামায়াতের সঙ্গে যেতে রাজি নয়। গণঅধিকার পরিষদকে দুটি আসন ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বিএনপি। দলটি আরও কয়েকটি আসন চায়। না পেলে দলটি এনসিপির সঙ্গে আসতে পারে বলে জানা গেছে।
নিবন্ধিত ৫৬ দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরীকত ফেডারেশন, বিকল্পধারাসহ কয়েকটি দলের এখন দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই। ফ্যাসিবাদের দোসর তকমা পাওয়া জাতীয় পার্টি এখনও একা। দলটির নির্বাচনী তৎপরতা দৃশ্যমান নয়।
জামায়াত নেতৃত্বাধীন নির্বাচনী সমঝোতায় রয়েছে ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জাগপা, ও বিডিপি। আসন না পেয়ে বিএনপিকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়েছে লেবার পার্টি। জানা গেছে, জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে তারা।
সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য-ন্যাপ, বাসদ (মাহবুব) মিলে গঠন করেছে গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট নামে নির্বাচনী মোর্চার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জেপি), জাতীয় পার্টি (আনিস-হাওলাদার), জাপা (মতিন), মুসলিম লীগ, এনপিপিসহ ১৬টি দল। জি এম কাদেরের সঙ্গে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত আগস্টে জাতীয় পার্টি ভেঙে একই নামে আরেকটি দল হয়। নিবন্ধিত জেপি, জাপা (মতিন), মুসলিম লীগ, এনপিপি ডামিখ্যাত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা করতে চাওয়া দলগুলোর সঙ্গেও আসন নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। সাতটি দল ইতোমধ্যে জামায়াত আমির শফিকুর রহমানকে নিজ নিজ দলের প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন ১৩০ আসনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৫০ আসনের তালিকা দিয়েছে। বিডিপি বাদে অন্যান্য দলও ১০ থেকে ২০টি করে আসনের তালিকা দিয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক মিত্ররা মিলে রাজনৈতিক পরিসর তৈরির জন্য এক হয়েছে। তাদের আশা, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভোট পেয়ে নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারবে। না পারলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে অন্তত রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবে।