Image description

আগামী মাসের নির্বাচনকে সামনে রেখে সেনা শাসনের বিরোধিতার অভিযোগে আটক বা পলাতক ব্যক্তিদের সাজা কমানো, ক্ষমা বা অভিযোগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। প্রায় আট হাজার ৬৬৫ জনের বিরুদ্ধে নমনীয়তার ঘোষণা দিয়েছে দারা। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।

 

 

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

 

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতোমধ্যেই এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ‘নকল গণতন্ত্র’ বলে সমালোচনা করছে। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, গণক্ষমার মাধ্যমে আরও বেশি ভোটারকে ভোট দিতে সহায়তা করা হবে।

 

 

 

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এরপরও সেনাবাহিনী আগামী ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এটিকে ‘স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরা’ বলে দাবি করছে।

 

 

 

ঘোষণা অনুযায়ী— ৩,০৮৫ জনের কারাদণ্ড কমানো হয়েছে। এসব ব্যক্তিরা ‘ভয় ছড়ানো বা ভুয়া তথ্য ছড়ানোর’ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ছিলেন। এছাড়া ৫ হাজার ৫৮০ জন পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে কতজন রাজনৈতিক বন্দি এবং মুক্তি কবে থেকে শুরু হবে—তা এখনো পরিষ্কার নয়।

 

আল জাজিরা জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই সেনা সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন জানান, ২৮ ডিসেম্বর ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই ক্ষমা প্রদান করা হয়েছে।

 

 

ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এপিকে জানান, মুক্তির প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হবে, তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা বা নাম তিনি জানাননি। অতীতে এমন ক্ষমার ঘোষণার পর বন্দি মুক্তি পেতে কয়েকদিন লেগেছে।

 

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ইনসেইন কারাগারের বাইরে অনেকেই জড়ো হন—বন্ধু বা স্বজনদের মুক্তি পাওয়ার অপেক্ষায়। এই গণক্ষমার আওতায় ৮০ বছর বয়সী সাবেক নেত্রী অং সান সু চি থাকবেন কি না—তা এখনও জানা যায়নি। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি কার্যত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন এবং ২৭ বছরের সাজা ভোগ করছেন।

 

 

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নির্বাচন মোটেই মুক্ত ও সুষ্ঠু হবে না, কারণ স্বাধীন গণমাধ্যম নেই এবং সু চির নেতৃত্বাধীন বিলুপ্ত ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)-র অধিকাংশ নেতা আটক রয়েছেন।

 

 

বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকের পরিচালক মার্ক ফারমানার এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, বন্দিদের জন্য খবরটি অবশ্যই ভালো। তিনি বলেন,প্রত্যাশিতভাবেই সামরিক সরকার নির্বাচনকে বৈধতা দিতে রাজনৈতিক বন্দিদের ব্যবহার করছে, যেন সংস্কারের ভান তৈরি করা যায়।

 

 

স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ২২ হাজার ৭০৮ জন রাজনৈতিক বন্দি রয়েছেন।