ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি গাজী সামসুল হক ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপ্লবসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে গোপনে বৈঠক করা আমতলীর সেই বিতর্কিত উপজেলা নিার্বহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁনকে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে তাকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়। তার বদলির খবরে আমতলীর সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জানা গেছে, এ বছর ১৩ মে মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরপরই তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এমন অভিযোগ উপজেলা বিএনপি নেতাদের। এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও সাধারণ মানুষের ক্ষোভ থাকলেও প্রকাশ করেনি। গত ৬ এপ্রিল তিনি আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি গাজী সামসুল হক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিয়ার রহমানের সহচর বশির মৃধাসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে চৌরাস্তায় সকাল-সন্ধ্যা হোটেলে ভিআইপি কক্ষে গোপন বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়টসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে ভাইরাল হয়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হন ইউএনও।
এ নিয়ে গত ২৩ অক্টোবর দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই তাকে অপসারণের দাবি তুলে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতারা। প্রতিবেদন প্রকাশের এক মাস তিন দিন পরে বুধবার (২৬ নবেম্বর) রাতে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করেছেন। তার বদলির খবর বুধবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সৈয়দ আসাদুজ্জামান কাওসার বলেন, নানাভাবে বিতর্কিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁনের বদলীতে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের লালনপালন করা, অসৎ উদ্দেশ্যে টেন্ডার ছাড়া উপজেলা পরিষদে ৬০ লাখ টাকা কাজ করা, আওয়ামী লীগ নেশাগ্রস্থ নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলা ও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ নানাভাবে তিনি বিতর্কিত। তার দায়িত্ব পালনের গত ৬ মাস ১২ দিনের কর্মকান্ড তদন্ত করে দেখার দাবি জানান তিনি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বদলির আদেশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব পদে আমাকে বদলি করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক তাছলিমা আক্তার বলেন, বদলিকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিষয়ে যত অভিযোগ তা আগের জেলা প্রশাসকের সময়ের। আমার কাছে তার বিষয়ে কোন অভিযোগ নেই।