Image description

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোর জন্য এখনো কোনো আসন চূড়ান্ত করা হয়নি। এতে শরিকদের মধ্যে উদ্বেগ, অনাস্থার পাশাপাশি তৃণমূলে বিভক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মিত্র দলগুলোর অভিযোগ, আসন নিশ্চিত না হওয়ায় তারা প্রচারে পিছিয়ে পড়ছে এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে। তাদের দাবি, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার পর হাতে সময় খুব বেশি থাকবে না। এখনই আসন বণ্টন চূড়ান্ত করা না হলে মাঠের পরিস্থিতি জটিল পারে।

বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী আন্দোলনের মিত্র প্রায় সব দলই তাদের প্রার্থী তালিকা জমা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত বিএনপির কাছে ১৬৮ জনের প্রার্থী তালিকা জমা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ছাড়া ছয় দলীয় জোট- গণতন্ত্র মঞ্চের বাকি পাঁচ দল ৪০ জন, ১২ দলীয় জোট ২১ জন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট নয়জন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ১৯ জন, এলডিপি ১৩ জন, গণঅধিকার পরিষদ ২৫ জন, গণফোরাম ১৬ জন, এনডিএম ১০ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) পাঁচজন, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ছয়জন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি) চারজনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। তবে তালিকা জমা নেওয়ার পর শরিকদের কারো সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বসেনি বিএনপি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আরপিও সংশোধনের কারণে জোট করলেও প্রতিটি দলকে নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে। ছোট দলগুলোর পক্ষে নিজস্ব প্রতীকে জেতা কঠিন হওয়ায় বিএনপি মিত্রদের দাবি অনুযায়ী আসন পুনর্বিন্যাসে কিছুটা সংকটে রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হলেও এ জটিলতার কারণে মিত্রদের আসন ঘোষণা করতে সময় লাগছে বিএনপির। তারা এখন মাঠপর্যায়ে জোট শরিকদের নিজ প্রতীকে জয়লাভের সক্ষমতার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করছে।

শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা জানান, একই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রতিদিনই প্রচারণা, গণসংযোগ ও শোডাউন করছেন। এতে জোটপ্রার্থীদের অবস্থান দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের মধ্যেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান না হলে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে তারা মনে করেন।

এদিকে আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের কয়েকটি দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে নেতারা বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে আসন ছাড় পাওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে নতুন করে যেসব আসনে ছাড় দেওয়া হবে, তা দ্রুত ঘোষণা করা উচিত। কারণ, বিষয়টি ঝুলে থাকায় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা পুরোদমে নিজেদের আসনে প্রচারণায় নামতে পারছেন না। ওইসব আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও সক্রিয় থাকায় পরিস্থিতি আরো জটিল হচ্ছে। এতে বিভিন্ন আসনে বিএনপির সঙ্গে মিত্র দল-জোটগুলোর স্থানীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ঝামেলাও বাড়ছে।

তবে বিএনপি থেকে বলা হয়েছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগির এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্ররাও এখন তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন।