ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, খুনি হাসিনা শুধু জুলাই-আগস্টে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা নয়। বাংলাদেশের অতীতেও হত্যার রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে আওয়ামী লীগ এবং খুনি হাসিনা। সাংবাদিক সাগর-রুনি থেকে শুরু করে যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সামান্য কথা বলা হয়েছে বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করা হয়েছে সেখানেই খুনি হাসিনা গুম-খুনের রাজনীতি চালিয়েছে। সর্বশেষ আমরা দেখেছি জুলাই-আগস্টে গণহত্যা করা হয়েছে। এজন্য খুনি হাসিনাকে একবার ফাঁসি দিলেই যথেষ্ট নয়, বরং তাকে যদি হাজারবার ফাঁসি দেওয়া হয়, তারপরও এতগুলো গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে মনে করি না।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভোলা জেলা পরিষদ হলরুমে ইসলামী ছাত্রশিবির ভোলা পৌর শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, আপনারা দেখেছেন ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সারাদেশ থেকে লগি-বাইঠা নিয়ে ঢাকায় আহ্বান করা হয়েছিল। এরপর কত নির্মমভাবে মানুষকে লগি-বাইঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। লাশগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং শুধু মৃত্যু নিশ্চিত নয়, লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নৃত্য করার মতো বর্বর কর্মকাণ্ডও করেছে খুনি হাসিনা ও তার বাহিনী আওয়ামী লীগ।
তারই ধারাবাহিকতায় এক-এগারো এসেছে এবং বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় এসে আমাদের দেশের চৌকস ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে দেশ মাতৃকা ও সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের জন্য, আধিপত্যবাদের কাছে নত হওয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের দক্ষ সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, আমরা দেখেছি রাতের আঁধারে শাপলা চত্বরে আলেম-ওলামাদের হত্যা করা হয়েছে। আল্লামা সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে যখন দেশের সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, তখন নারী-পুরুষ-শিশুসহ ১০০-র বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এটি বড় একটি গণহত্যা ছিল। বাংলাদেশে এমন কোনো মানুষ বা পেশা ছিল না, যাদের ওপর হাসিনা নির্যাতন চালায়নি।
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, খুনি হাসিনা অন্য জায়গায় পালিয়ে বসে আছে। সেই রাষ্ট্রকে আমরা বলতে চাই যারা আমাদের দেশের গণহত্যাকারীদের আশ্রয় দেয়, তারা কখনোই আমাদের বন্ধু হতে পারে না। যারা আমাদের দেশের ফেলানিকে হত্যা করেছে, কথায় কথায় সীমান্তে গুলি চালিয়ে আমাদের মানুষকে হত্যা করে তারা আমাদের বন্ধু হতে পারে না। আমরা তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, প্রতিবেশীরা প্রতিবেশীর মতো আচরণ করবে, প্রভুত্ব বা দাদাগিরির আচরণ করবে না। এজন্য খুনি হাসিনাকে দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সামনে প্রকাশ্যে তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে কেউ যেন হাসিনা হয়ে ওঠার চেষ্টা না করে। হাসিনার পরিণতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা চাই সকলেই ফ্যাসিবাদমুক্ত রাজনীতি ও সংস্কৃতি গড়ে তুলবে এবং সেই আলোকে নিজেদের দলীয় এজেন্ডা নির্ধারণ করবে, মানুষের জন্য রাজনীতি করবে। কোনো ফ্যাসিবাদী বা খুনের রাজনীতি করবে না। আমি আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব শিগগিরই ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে এনে, তার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গণহত্যাগুলোর বিচার করে দণ্ড কার্যকর করবে।
এ সময় ইসলামী ছাত্রশিবির ভোলা পৌরসভা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আমিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর ভোলা জেলা শাখার আমির মাস্টার জাকির হোসাইন প্রমুখ।