Image description
 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে নিজেদের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে, এখনো ৬৩টি আসনে প্রার্থী তালিকা বাদ রয়েছে। কোথাও কোথাও পুরো জেলা, অনেক জেলায় একাধিক আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি বিএনপি। ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে সাতটি আসনই ফাঁকা রেখেছে দলটি। আসনগুলো হলো ঢাকা-৭, ঢাকা-৯, ঢাকা-১০, ঢাকা-১৩, ঢাকা-১৭, ঢাকা-১৮ ও ঢাকা-২০।

 

এ ফাঁকা সাতটি আসনের দিকে সবার চোখ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী। তারা হলেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, মহিলা দল সভাপতি আফরোজা আব্বাস, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার অসীম, কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী অনেকেই। তাদের প্রার্থীতা পাওয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে সম্ভাব্য একক প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বাকি ৭টি আসনে কারা পাচ্ছেন মনোনয়ন-সেদিকে এখন সবার চোখ।

সূত্র জানায়, সর্বোচ্চ ৪ থেকে ৫টি আসন ছাড় দিতে পারে বিএনপি। তবে এই সাতটি আসনে দলটির ত্যাগী প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ মনোনয়ন চাইছেন।

ঢাকা-৯ আসনে আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবীব। ঢাকা-১০ আসনে মনোনয়ন চান বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম ও নির্বাহী কমিটির সদস্য রবিউল আলম রবি। 

ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম। ঢাকা-১৭ আসনে সেভাবে হেভিওয়েট কোনো প্রার্থী মনোনয়ন চাননি। ঢাকা-১৮ আসনে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর।

ঢাকা-২০ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তমিজ উদ্দিন, জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ।

এছাড়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যে যে কোনো একটি আসনে প্রার্থী করা হতে পারে।

এদিকে এরই মধ্যে বিএনপির কাছ থেকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ নিয়ে কয়েকদিন আগে থেকেই ঢাকা-১৩ আসনে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন ঘনিষ্ঠ মিত্র এনডিএম’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

তিনি বলেন, ‘জোট ডিক্লারেশন অফিশিয়ালি যখন হবে তখন জোটের প্রার্থী একই সঙ্গে ঘোষণা হবে। আমাকে মৌখিকভাবে জানানোর পরই আমার নির্বাচনি এলাকায় কাজ করছি।’ ঢাকার গুলশান-বনানী এলাকায় এরই মধ্যে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির আরেক মিত্র দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আন্দালিব রহমান পার্থ।

সূত্রমতে, ঢাকার আরও তিনটি আসন ছাড়তে পারে বিএনপি। তবে কোন আসন- তা এখনো নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক যুগান্তরকে বলেন, তরুণদের দল এনসিপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। আবার গণফোরামের সুব্রত চৌধুরীর জন্যও একটি আসন ছাড়া হতে পারে। বৃহৎ জোটের বিষয়েও আলোচনা চলছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা মামুনুল হককেও ছাড় দেওয়া হতে পারে একটি আসন। সবকিছু হিসাব-নিকাশ করেই বিএনপি আসন ছাড় দেবে। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা এ-ও বলছেন, ঢাকার আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী), ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি) ও ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসন। একটি আসন ছাড় দিলে অন্য দুটি আসন দলের রাখার বিষয়ে তৃণমূলের চাপ রয়েছে।

ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এসএম জাহাঙ্গীর যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যারা কাজ করছে, কর্মীদের কাছে কে জনপ্রিয়, জনগণের কাছে কে জনপ্রিয়, কার ওপর আস্থা আছে-অবশ্যই দল এসব বিবেচনায় রাখবে। আমি বিশ্বাস করি এসব বিবেচনায় নিলে আমাকেই বেছে নেবে।

তিনি আরও বলেন, রাজধানীর প্রবেশদ্বারগুলো নানা কারণে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই আমার ধারণা এই প্রবেশদ্বারগুলো দল অন্য কাউকে দেবে না। এটা দলের কর্মীদেরই দেবেন।