Image description
 

চট্টগ্রামে বিএনপির নির্বাচনী জনসংযোগে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পর দলীয় কোন্দল নিয়ে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘দলীয় কোন্দলে গুলি খেতে না চাইলে এনসিপির রাজনীতি করুন।’

বুধবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এনসিপির যৌথ সমন্বয় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী গণসংযোগে গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, ‘অস্ত্রের রাজনীতি, চাঁদাবাজির রাজনীতি মানুষ আর চায় না। আগামীর ভোট হবে মাফিয়া, চাঁদাবাজ আর বুলেটের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামে ব্যালটের চেয়ে বুলেট শক্তিশালী হয়ে গেছে। যারা ব্যালটের চেয়ে বুলেটকে প্রভাবশালী করেছে, তাদের বিচার একদিন হবেই।’

 

হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা বিএনপির মনোনয়ন পাননি, তারা যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান, তাদের এনসিপিতে স্বাগতম। এনসিপি কোনো জোটনির্ভর দল নয়। আমরা আসন বণ্টনের রাজনীতি নয়, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রাজনীতি করি। বিএনপি-জামায়াত শেষ পর্যন্ত এনসিপির অবস্থানেই এসে দাঁড়াতে বাধ্য হবে।’

 

সভায় সরকারের দুই উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এই সরকারের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রকল্প হলো স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তিনি না স্বাস্থ্য বোঝেন, না জনগণের কষ্ট বোঝেন। তিনি বোঝেন, কোন জেলা থেকে কিস্তি তুলবেন, কোন ওষুধ বিক্রি করলে বেশি মুনাফা হবে। তার ব্যর্থতার দায় আমাদের দীর্ঘদিন বইতে হবে।’

 

খুলনায় এক ‘জুলাই যোদ্ধা’র চোখ হারানোর ঘটনার দায়ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বলে দাবি করেন তিনি।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার প্রতিও অসন্তোষ প্রকাশ করে হাসনাত বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধাদের পাওনা মেটাতে নানা প্রটোকল দেখানো হচ্ছে। যদি দ্রুত পরিশোধ না করা হয়, তবে প্রটোকলে থাকা কালো গ্লাসের গাড়ি থেকে টেনে বের করে পাওনা আদায় করা হবে।’

এনসিপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘চট্টগ্রামে এনসিপির কর্মীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোরাম দেখি। টিকে থাকতে হলে কোরাম নয়, কর্ম দরকার। একা সফল হতে চাইলেই পতন আসবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান সমন্বয়কারী মীর আরশাদুল হক বলেন, কমিটিতে জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রাখা, সিনিয়র সিটিজেন, সমাজের কল্যাণে কাজ করাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আহত শহীদ ভাইয়েরা চায়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হোক। নতুন বাংলাদেশ গড়তে যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠিক সম্পাদক এ এস এম সুজা উদ্দিন বলেন, ‘আপনারা নিজেদের প্রস্তুত করুন, নতুন মানুষদেরকে নিয়ে আসুন, এনসিপির কর্মী বলে পরিচয় দিন।’

কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ বলেন, পার্টির সমালোচনা মিডিয়াতে সারাদেশে দেখানো হচ্ছে, তাই আপনি এনসিপি করবেন। ১৬টি আসনের ১০-১২টি আসন জাতীয় নাগরিক পার্টি জয় লাভ করবে। আগামী ১০ বছরে জাতীয় নাগরিক পার্টি সরকার গঠন করবে। আমরা স্বপ্ন দেখছি সত্যিকার মানবিক রাষ্ট্র।

কেন্দ্রীয় সদস্য জুবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, বিএনপির রাজনীতি নিয়ে আমাদের মন খারাপ হয়। আমরা সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা বলছিলাম। কিন্তু বিএনপি গ্রুপিং করে সন্ত্রাসের শোল্টার দিচ্ছেন।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী হাসান আলী, উত্তর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী সেগুপ্তা বুশরা মিশমা, চট্টগ্রাম মহানগর সমন্বয় কমিটির সদস্য ও মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী রিদুয়ান হৃদয়সহ আরও অনেকে।