জুলাই গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল আসছে ফেব্রুয়ারিতেই। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে আত্মপ্রকাশ করা হবে, পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে জাতীয় নাগরিক কমিটি সূত্রে জানা যায়।
তারুণ্যনির্ভর এই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে কারা কারা থাকবেন, কেমন হবে দলের সাংগঠনিক কাঠামো, কী থাকবে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে।
জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণে কীভাবে এগোচ্ছে দল গঠনের প্রক্রিয়া, কেমন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিপর্ব- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এবং সহ-মুখপাত্র মুশফিক উস সালেহীন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গণসংযোগের মাধ্যমে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। নতুন রাজনৈতিক দল গঠন এবং এর সঙ্গে যুক্ত হতে তরুণরা প্রতিনিয়ত ভূমিকা রাখছেন। আমাদের রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। যথাসময়ে রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পূর্বে দফায় দফায় নিজেদের মধ্যে মিটিং করছেন তরুণরা। সর্বশেষ গত শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে ছিল রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও কর্মপন্থা, সাংগঠনিক শক্তিমত্তা বৃদ্ধি, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র।
ভিন্ন একটি নাম নিয়ে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হবে তরুণদের দল। আনুষ্ঠানিকভাবে ১০-২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। সভায় প্রত্যেকের উদ্দেশে বলা হয়েছে, পরবর্তী মিটিংয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র এবং কর্মপন্থা নিয়ে যার যার মতামত লিখিত প্রস্তাবনা আকারে উপস্থাপনের জন্য। লিখিত প্রস্তাবনার গুরুত্ব সাপেক্ষে আলোচনা করে রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কাঠামো নির্ধারণ এবং গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা জানান, প্রথমে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে। এরপর কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। আহ্বায়ক কমিটিতে থাকবেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সব পরিচিত মুখ। এদের মধ্যে রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম প্রমুখ। আলোচনা হয়েছে নতুন রাজনৈতিক দলে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা তিন ছাত্র উপদেষ্টার ভূমিকা কী হবে তা নিয়েও। এদিকে, দল ঘোষণার আগে সব জেলা, উপজেলা ও মহানগরে প্রতিনিধি কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে চায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ২১০টিরও বেশি কমিটি গঠনের কাজ শেষ হয়েছে। জানুয়ারির মধ্যেই সাড়ে তিন শর কমিটি গঠনের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন কমিটি সংশ্লিষ্টরা।
