খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘ভোট কেন্দ্রগুলো কুকুরের দখলে ছিল’- চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নাই, তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারে নাই, রাতের অন্ধকারে ভোট হয়েছে, বিনা ভোটে ১৫০ আসনের বেশি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদকে তামাশায় পরিণত করেছিল। আমরা এদিকে ফিরে যেতে চাই না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের গণভোট বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা মনে করি, জুলাই সনদের ফসল ঘরে তুলতে না পারলে বাংলার মানুষ অর্জিত স্বাধীনতা আবার হাতছাড়া করবে। পরিষ্কার ভাষায় আমরা বলে দিতে চাই, জুলাই সনদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করতে হবে।
মঙ্গলবার বিকালে মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর তহুরা আমিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে খেলাফত মজলিস আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে মদন, খালিয়াজুড়ী ও নেত্রকোনার মাটি ইসলামের ঘাঁটি। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এ দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থিরা ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার জুলুম ও নির্যাতনের টার্গেটে পরিণত হয়েছিল। আমরা ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে জীবন দিয়েছি। ২০২১ সালে আন্দোলনে জালিমের বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছি, জালিমের রক্তচক্ষুর সামনে মাথা নোয়াইনি।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে বছরের পর বছর বন্দি রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা নির্যাতন সহ্য করেছি, তবু দেশ ও ইসলামের প্রশ্নে আমরা মাথা নত করি নাই। স্বাধীনতা ও ইসলামের প্রশ্নে আমরা কোনো অপশক্তির সামনে মাথা নত করব না ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, এ দেশের তামাম ছাত্র-জনতার রক্তের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী, বিদেশি আধিপত্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিটি অর্জন ঘরে তোলার জন্য খেলাফত মজলিস সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
সমাবেশে খেলাফত মজলিসের খালিয়াজুড়ী উপজেলা সভাপতি ও নেত্রকোনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি ইরশাদুল্লাহ কাসেমীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- নায়েবে আমির আল্লামা আলী উসমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন সদস্য, অভিভাবক পরিষদ ও নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি আল্লামা জিয়া উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেদায়াকুল্লাহ হাদী প্রমুখ।