সম্প্রতি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিধস বিজয় পেয়েছে। দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ না পাওয়া সত্ত্বেও ছাত্রশিবিরের এমন জয়কে রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তার মতে, এই জয় কেবল সংগঠনিক নয়—এর পেছনে কাজ করছে ‘ওয়েলফেয়ার বেইজড পলিটিক্স’। তিনি বলেন, গ্রামে মানুষ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার বিনিময়ে কোনো বাছ-বিচার ছাড়াই ভোট দেয়, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষিত তরুণরাও একই পথে হাঁটছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পলিটিক্স ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, ছাত্রদল ও শিবির নানা বাস্তবতায় এতদিন ক্যাম্পাসে যেতে পারতো না, প্রকাশ্যে পরিচয়ও দিতো না। শিবির তো একেবারে নিষিদ্ধ ছিল। তবুও সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের জয়জয়কার, এটা আমার কাছে রহস্যজনক। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের একেবারে ভূমিধস বিজয় হয়েছে। সবাই জানে স্বতন্ত্ররা যারা জিতছে তারাও শিবিরের নেক্সাসের। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষিত তরুণরা কেন তাদের ভোট দিলো?
নুর জানান জানান, তার বিশ্লেষণে শিবিরের এই সাফল্যের পেছনে কাজ করছে তাদের ‘ওয়েলফেয়ার বেইজড পলিটিক্স’ বা কল্যাণভিত্তিক রাজনীতি। তারা ছাত্রদের নানা সুবিধা দেয়। অনেকে বলছেন, কিছু হাসপাতালে শিবির এমন চুক্তি করেছে যেখানে সদস্যদের পরিবার খুব কম খরচে চিকিৎসা নিতে পারে।
সুবিধার বিনিময়ে ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে নুর বলেন, আমরা যে তরুণদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি, যে তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই পরিবর্তনের দিকে। গ্রামে আমরা দেখি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায় মানুষ ভোট দিয়ে দেয় আরেকজনকে। বাছ-বিচার করে না। সেটা জনসচেতনতার অভাব যার ফলে অযোগ্য মানুষ সংসদে চলে আসে, নেতৃত্বে চলে আসে; তাহলে উচ্চশিক্ষিত তরুণরা তো তাই করছে।
এদিকে নুরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাকি ৫০০–১০০০ টাকায় ভোট বিক্রি করেছে! এ প্রজন্মকে চিনতে ভুল করেছো। তোমরা টাকার কাছে বিক্রি হতে পারো, কিন্তু এই প্রজন্ম উচ্ছিষ্ট ভোগ করে না।