Image description

রাজশাহী বিভাগ থেকে কেন্দ্রে ডাক পাওয়া মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরকে দলের ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় নিজ এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ডাক পাওয়া নেতাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন। সেখানে উপস্থিত একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলে এ কথা জানা গেছে।

তারেক রহমান বলেন, প্রতিনিয়ত বিএনপির সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ এসে হাজির হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে ধৈর্য্য সহকারে ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে। আগামি নির্বাচন কঠিন হবে এবং উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, দলের ভাবমূর্তির প্রতি সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। বিএনপি জনগণের দল। জনগণের জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। সেই প্রস্তুতি সবাইকে এখনই নিতে হবে।

দলীয় সূত্র মতে, আগেরদিন স্বল্প সময়ের নোটিশে রাজশাহী বিভাগের ৩৯ আসনের তালিকাভুক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বার্তা পাঠানো হয়। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দনের মাধ্যমে তাদের দ্রুত চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে ভিডিওকলে যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বিশেষ সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাড়া শুধুমাত্র বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন, ইকবাল মাহমুদ খান টুকু ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে এ সভায় কোনো মনোনয়ন প্রত্যাশী বক্তব্য দেওয়া বা কথা বলার সুযোগ পাননি। জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের ৩৯ আসনের বিপরীতে প্রতিটি আসন থেকে গড়ে তিন থেকে চারজন করে মনোনয়ন প্রত্যাশীকে ডাকা হয়েছিল। কোনো কোনো আসন থেকে মাত্র একজনকেও ডাকা হয়।

জানা গেছে, বিভাগের মধ্যে রাজশাহীতে সংসদীয় আসন ৬টি। এছাড়া নাটোরে ৪টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩টি, নওগাঁ জেলায় ৬টি, জয়পুরহাট জেলায় ৩টি, পাবনায় ৬টি, সিরাজগঞ্জ জেলায় ৬টি এবং বগুড়া জেলায় সর্বাধিক ৭টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এসব আসন থেকে সোমবারের বিশেষ সভায় বিএনপির ১৩১ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে ডাকা হয়েছিল। নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসন থেকে শুধুমাত্র ডাকা হয়েছিল চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুশ তালুকদার দুলুকে। রাজশাহী-২ (মহানগর) আসন থেকে ডাকা হয়েছিল চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশাকে। রাজশাহীর বাকি ৫টি আসন থেকে কোথাও তিনজন কোথাও চারজনকে ডাকা হয়েছিল। মঙ্গলবার অনেক মনোনয়ন এলাকায় ফিরে মাঠে গণসংযোগ শুরু করেছেন। অনেকেই ঢাকায় থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। রাজশাহী-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের সবাইকে অতি উৎসাহী না হয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মাঠে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। দল যাদেরকে মনোনয়ন দেবে তাদেরকে শুধুমাত্র ব্যক্তি বিবেচনা না করে দলীয় আমানত হিসাবে গ্রহণ করে আমানত রক্ষায় মাঠে নামতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলে দিয়েছেন এলাকায় ফিরে গিয়ে মনোনয়ন পেয়ে গেছেন অতি উৎসাহী হয়ে কেউ যেন এমনটা না করেন। এতে দলের ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন, ভারপ্রাপ্ত বলে দিয়েছেন, যাদেরকে ডাকা হয়েছে তারা যেন এলাকায় গিয়ে বলতে শুরু না করেন যে, তিনি মনোনয়ন পেয়ে গেছেন। এমনটা হলে দলের নেতাকর্মী ও জনগণের মাঝে ভুল বার্তা যেতে পারে।