কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণায় নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় বিএনপি। নির্বাচন সামনে রেখে সাক্কুকে থামাতেই কি বিএনপি মহাসচিব তাকে ঢাকায় ডেকে পাঠান? নাকি বিএনপির রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বিএনপি মহাসচিবের শরণাপন্ন হয়েছেন? ঢাকায় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে তার একান্ত বৈঠক নিয়ে নগরজুড়ে আলোচনা চলছে। এটি এখন টক অব ট্যা কুমিল্লা।
কুমিল্লাবাসীর জল্পনা তবে কি সাক্কু আবারও দলীয় পদে ফিরবেন? নাকি রাজনীতির অন্তরালে চলছে অন্য খেলা?
এদিকে সেদিন বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সাক্কুর কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা তিনি এখনো খোলাসা করেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা-৬ সংসদীয় আসনটি জেলার রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে বিএনপির রাজনৈতিক অনেক কৌশল থাকতে পারে। এতে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে নানামুখী তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
তাছাড়া এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দিন দিন সুবিধাজনক অবস্থায় চলে যাচ্ছেন। এসব বিষয় বিএনপির হাইকমান্ডের নজরে রয়েছে। কুমিল্লা সদর আসন নিয়ে কাজ করছে বিএনপির বিভাগীয় টিম।
দলীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এতে দলীয় প্রার্থীর ভোটের ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ সাক্কুর কুমিল্লায় একটা ভোটব্যাংক আছে। যার ফলে সাক্কুকে কব্জায় নেওয়ার কাজ করছে বিএনপির হাইকমান্ড।
সম্প্রতি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে নিজ বাসায় ডেকে নেন। সেখানে তাদের মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। আলোচনা হয় কুমিল্লার চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সার্বিক বিষয় নিয়ে।
জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিবের সামনে সাক্কু কুমিল্লার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং সেখানে আগামী নির্বাচনে ভোটের ক্যালকুলেশন তুলে ধরা হয়। মহাসচিব গুরুত্ব দিয়ে সাক্কুর সব কথা শুনেন।
সূত্র জানায়, দলীয় প্রার্থীর স্বার্থ রক্ষা, কোন্দল দ্বন্দ্ব নিরসন এবং দলের ঐক্যের স্বার্থে সাক্কুকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হতে পারে। তবে এ বিষয়ে মাঠে গুঞ্জন থাকলেও দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো নেতা মুখ খোলেননি।
কুমিল্লার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, বিএনপির হাইকমান্ড কোন্দল নিরসনের লক্ষ্যে সাক্কুকে থামাতে চাচ্ছে। দলীয় প্রার্থীর ঝুঁকি কমাতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। কারণ সাক্কু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ালে বিএনপির কিছু ভোট তার পক্ষে যেতে পারে। এতে জামায়াতের প্রার্থী অতিরিক্ত সুবিধা পেতে পারেন।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, দলের হাইকমান্ড সাক্কু সাহেবের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা আমাদের জানা নেই। তবে কুমিল্লার রাজনীতির জন্য তিনি বর্তমানে তেমন প্রাসঙ্গিক নয়। নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্যই তিনি নিজে নিজে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন।