Image description

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনেক রকমের বক্তব্য আছে, যেগুলো আমরা নিজেরাও ধারণ করি অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার হিসেবে। কিন্তু সেগুলোকে একটা বাস্তব রূপ দিতে হবে এবং বাস্তবের নিরিখে কথা বলতে হবে। আমরা যেন এমন কোনো প্রস্তাব না দেই, যেন ভবিষ্যতে সেই প্রস্তাবিট আদেশগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হয়, কেউ জুডিশিয়ারির কাছে নিয়ে যেতে চায় এবং সেগুলোর মধ্য দিয়ে যেন আমাদের এই টোটাল প্রক্রিয়াটা একসময় অবৈধ বলে যেন আওয়াজ না দিতে পারে।

 

গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

 

আমি সবার অবগতির জন্য বলতে চাই যে, আমরা যেন কোনোভাবেই আইনানুগ প্রক্রিয়ার বাইরে না যাই, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার বাইরে না যাই। অনেকেই আবেগের বশে বলে থাকেন যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণের যে অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে, সে অভিপ্রায়ের শক্তি বলে অনেক বৈপ্লবিক আদেশ জারি করা যায়। এই বক্তব্য হচ্ছে আবেগি বক্তব্য। কারণ জনগণের অভিপ্রায়কে বাস্তবায়ন করার জন্যেই আমরা সবাই সংবিধানের আশ্রয় নিয়েছি এবং সাংবিধানিকভাবেই এ সরকার গঠিত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সাংবিধানিকভাবে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ

 

সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা সবাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র প্রশ্নে এমনভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকব যেন ফ্যাসিবাদকে আমরা কোনোভাবে প্রত্যাবর্তন হতে দেব না, সব দরজা দরজা বন্ধ করে দিতে হবে।

 

তিনি বলেন, এজন্য আমরা জুলাই সনদ প্রণয়ন করেছি এবং মোটামুটি সবাই এতে সই করেছে। এনসিপিসহ দুয়েকটি দল সই করার সুযোগ পায়নি। কারণ তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আশা করা যায় তার একটা সমাধান হবে, তারপর তারাও সই করতে পারবেন। তাহলে এই জুলাই সনদ হবে আমাদের জাতীয় জীবনে রাজনৈতিক সমঝোতার একটা ঐতিহাসিক দলিল বা পূর্ণাঙ্গ দলিল হবে যা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও অঙ্গীকারাবদ্ধ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট ফোরাম হচ্ছে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ। এটা নিয়ে কোনো দলের কোনো দ্বিমত নেই। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংসদ যেন বাধ্য থাকে, সেটার একটা আইনি ভিত্তি রচনার জন্য এখন সেই প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের কাছ থেকে প্রস্তাব অথবা সুপারিশ সরকারের কাছে দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি সবার অবগতির জন্য বলতে চাই যে, আমরা যেন কোনোভাবেই আইনানুগ প্রক্রিয়ার বাইরে না যাই, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার বাইরে না যাই। অনেকেই আবেগের বশে বলে থাকেন যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণের যে অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে, সে অভিপ্রায়ের শক্তি বলে অনেক বৈপ্লবিক আদেশ জারি করা যায়। এই বক্তব্য হচ্ছে আবেগি বক্তব্য। কারণ জনগণের অভিপ্রায়কে বাস্তবায়ন করার জন্যেই আমরা সবাই সংবিধানের আশ্রয় নিয়েছি এবং সাংবিধানিকভাবেই এ সরকার গঠিত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সাংবিধানিকভাবে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, পরবর্তী পার্লামেন্টে অবশ্যই এ সরকারের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়া হবে। এটাই আমাদের সাংবিধানিক ঐতিহ্য, বাংলাদেশে এভাবেই রক্ষিত হয়েছে। সুতরাং আমরা এমন কোনো অসাংবিধানিক পদ্ধতির দিকে না যাই যেন ভবিষ্যতে এটা নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠবে। জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, যেখানে নোট অব ডিসেন্ট সহকারে সম্মতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই জায়গা থেকে জাতীয় সংসদ সরতে পারবে না এবং সেটাই হচ্ছে জনগণের প্রকৃত অভিপ্রায় ও কনস্টিটিউশনাল পাওয়ার।

 

সালাহউদ্দিন বলেন, এখন যদি আমরা ইমোশনালি রাজনৈতিকভাবে সুখ অনুভব করার জন্য অনেক রকমের আদেশ নির্মাণ করি—সেই আদেশের ভিত্তিগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠবে, জুডিশিয়ারিতে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে। সে জায়গায় যেন আমরা না যাই।