কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাতিমারা গ্রামে একটি নির্মাণাধীন এলপিজি গ্যাস ফিলিং স্টেশনে হামলা, শ্রমিকদের মারধর, চাঁদাবাজি, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফিলিং স্টেশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বাবুল আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনাটি ঘটে গত রোববার বিকালে হাতিমারা গ্রামের মেসার্স বাদশা এলপিজি অটো গ্যাস অ্যান্ড ফুয়েল ফিলিং স্টেশনে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়ের করেন রফিকুল ইসলাম।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সাল থেকে বৈধভাবে ফিলিং স্টেশনটি পরিচালনা করছেন রফিকুল ইসলাম। সম্প্রতি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য স্টেশনের নির্মাণকাজ শুরু করলে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বাধা দিতে থাকেন এবং নিয়মিত চাঁদা দাবি করেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, রোববার বিকালে মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সভাপতি রহমত উল্লাহ জিকু, সোহান, আবু বকর ছিদ্দিক আলমগীর, শ্রাবণ, আবদুর রহিমসহ আরো অজ্ঞাত সাত-আট ব্যক্তি লাঠি, হকিস্টিকসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে। তারা বাদীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
বাদী চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর জখম করে। এরপর তারা স্টেশনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগে বলা হয়, হামলাকারীরা প্রায় ২০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি ও পাঁচ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আরো প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রফিকুল ইসলাম কুমিল্লা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, আমি একজন ছোট ব্যবসায়ী। রহমত উল্লাহ জিকুসহ এলাকার কিছু লোক আমার ব্যবসা বন্ধ করে দিতে চায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্ত যুবদল নেতা রহমত উল্লাহ জিকু বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর আমি চাঁদাবাজি করেছি, এমন কথা কেউ বলতে পারবে না। ভূমিদস্যু বাবুল আমাকে বারবার ম্যানেজ করতে চেয়েছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলিনি। আমি একজন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়েছি ।
অন্যদিকে ওই স্টেশনের ভূমির মালিক আবুবকর সিদ্দিক আমার দেশকে বলেন, রফিকুল ইসলামকে আমি ১২ শতক জমি ভাড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমাকে ভাড়ার টাকা দেয়নি। বরং গত সোমবার বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে আমার ওপর হামলা করে। তাই আমি বুধবার তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি ।
মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বিপুল চন্দ্র দে আমার দেশকে বলেন, রফিকুল ইসলাম বাবুল থানায় এসেছিলেন। শুনেছি তিনি আদালতে মামলা করেছেন। তবে এখনো আদালত থেকে কোনো কাগজ আমার কাছে আসেনি।