
হবিগঞ্জে বিএনপি নেতার চাপে জুলাই আন্দোলনে হত্যা মামলার দুই আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) । বিএনপি নেতা সামছুল ইসলাম জেলার সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক। ছাড়া পাওয়া দুই আসামি হলেন, সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান ওরফে রানা (৪০) ও একই কমিটির সদস্য মামুন আহমেদ (৩৮)।
এরআগে গত রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে হবিগঞ্জে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামুন আহমেদ ও মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। ওই দিন দিবাগত রাত দুইটায় দুজনকে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়। পরদিন সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে হবিগঞ্জ সদর থানা থেকে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকেলে ঢাকার মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় চলতি বছরের ৩ জুলাই স্থানীয় বাসিন্দা আশিক মিয়া বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ শতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। একই মামলায় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আব্দবকাই গ্রামের মামুন আহমেদ ১৮ নম্বর ও মাহবুবুর রহমান ২১ নম্বর আসামি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামুন ও মাহবুবকে বিএনপির লোক দাবি করে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশকে চাপ দেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম। এ নিয়ে রাতভর পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চলতে থাকে নানা বোঝাপড়া। অবশেষে আটকের ১৮ ঘণ্টা পর সোমবার রাত আটটায় হবিগঞ্জ সদর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার দুজনকে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা সমালোচনা।
এ ব্যাপারে জানতে সামছুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আমির হোসাইন বলেন, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে নিয়েছেন বিএনপির নেতা সামছুল ইসলাম। আটক হওয়া লোকজন সামছুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ির দিক দিয়ে আত্মীয় হন।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি এ কে এম শাহাবুদ্দিন শাহীন বলেন, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে দুজনকে যুবলীগ নেতা মনে করে আটক করা হয়। তারা মোহাম্মদপুর থানার জুলাই আন্দোলনের একটি হত্যা মামলার ১৮ ও ২১ নম্বর আসামি হলেও প্রকৃতপক্ষে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তারা বিএনপি পরিবারের সদস্য। এরপর আসামিদের একজনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।