
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ফের ধর্ষণ-হত্যা, আদালতে ফাঁসির রায়
মাদারীপুরে মাদরাসাছাত্রী দীপ্তিকে (১৫) ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ইজিবাইকচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন খানকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাদারীপুর আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের এ রায় আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবির আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাজ্জাদ মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
রায়ের পর দীপ্তির বাবা মজিবর ফকির সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মেয়ের হত্যাকারী আজ আইনের কাছে জবাবদিহি করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।”
নিহত দীপ্তি মাদারীপুর সদর উপজেলার চরনচনা গ্রামের মজিবর ফকিরের মেয়ে। তিনি বলাইরচর শামসুন্নাহার বালিকা মাদরাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
মামলার পিপি অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবির বলেন, “দীর্ঘ ছয় বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যা মামলা। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।”
উল্লেখ্য, সাজ্জাদ এর আগেও ১৯৯২ সালে শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। সাজা ভোগ শেষে ২০১১ সালে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের বাবা মজিবর ফকির মরদেহ শনাক্ত করে জানান, সেটি তার মেয়ে দীপ্তির। এরপর তিনি মাদারীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে নামে র্যাব-৮। তদন্তে বেরিয়ে আসে—ইজিবাইকচালক সাজ্জাদ হোসেন খান ওই দিন বৃষ্টির মধ্যে দীপ্তিকে ইটেরপুল এলাকা থেকে তার বাড়ির উদ্দেশে নেন। এ সময় অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় তিনি দীপ্তিকে জোরপূর্বক পূর্ব খাগদী এলাকার নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেন। পরে মরদেহ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেঁধে কয়েকটি ইটসহ পুকুরে ফেলে দেন।
দুই দিন পর মরদেহটি ভেসে উঠলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও দ্রুত বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে স্থানীয়রা।
(ঢাকাটাইমস