Image description

শেষবারের মত ক্যাম্পাসে আসলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন। একইসঙ্গে শেষবারের মতো ক্যাম্পাস ছাড়লেনও তিনি। যে ক্যাম্পাসে হাসি-আড্ডা, রাজনীতি আর স্বপ্নে কাটিয়েছেন জীবনের সোনালি দিনগুলো, সেখানেই আজ তাকে বিদায় জানাল সহপাঠীরা, শিক্ষকরা ও সংগঠনের সহযোদ্ধারা।

আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিহত জোবায়েদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ক্যাম্পাসের বাতাসে ছিল শোকের নিস্তব্ধতা, সহপাঠীদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ। একে একে সবাই বিদায় জানায় প্রিয় মুখ জোবায়েদকে। 

জানাজায় জুবায়েদের বাবা অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাবা মো. মোবারক হোসাইন বলেন- ‘আমার জুবু (জোবায়েদ) আর নেই। জুবুর মাকে আমি কি বুঝ দিব’। এ সময় উপস্থিত সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, শিবির ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। মিছিল নিয়ে তারা ক্যাম্পাস থেকে কোর্ট এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার ফিরে আসেন। এ সময় তারা জোবায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।

এর আগে গতকাল রবিবার (১৯ অক্টোবর) ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় খুন হন জোবায়েদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় ওই ছাত্রী জানায়, প্রেমিকের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় খুন করা হয় জুবায়েদকে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মেয়েটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইনকে পছন্দ করতেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনা জেনে যায় তার প্রেমিক। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় চতুর্থ শ্রেণি থেকেই তাদের পরিচয়। এরপর তার সঙ্গে মেয়েটির ৯ বছরের প্রেম ছিল। জুবায়েদকে পছন্দ করায় তার সম্পর্ক ছিন্ন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে জুবায়েদকে হত্যা করেন। 

 

অভিযুক্ত তরুণের নাম মো. মাহির রহমান। তিনি রাজধানীর বোরহানউদ্দিন কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি নুরবক্স এলাকাতেই বসবাস করেন। তিনিসহ ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে এক বন্ধু ধরতে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

জুবায়েদ হোসাইন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় নুরবক্স লেনের রৌশান ভিলায় এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।