Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার মাদ্রাসা শিক্ষা ও ইসলামি মূল্যবোধের উপরে যে ধারাবাহিক আক্রমণ করেছে তা প্রতিহত করতে তা’মীরুল মিল্লাতের ছাত্র-শিক্ষকদের ভূমিকা ছিল অত্যধিক। তারা জুলাই আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিল।

রাজধানীর (১৪ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ীর মিরহাজীরবাগে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ১ম জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই আন্দোলনে এই মাদ্রাসার পাঁচটি তাজা প্রাণ শহীদ হয়ে মানবিক দেশ গড়ার আমরা সাক্ষী হয়ে আছি। আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ায় মিল্লাতিয়ানদের নব উদ্যোগে নিজেদের সামগ্রিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হবে ইনশাআল্লাহ।

 

মাদ্রাসার ছাত্র সংসদের অঙ্গ সংগঠন মিল্লাত ডিবেটিং ক্লাব আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিতার্কিকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল পুরো ক্যাম্পাস। তিন মাসব্যাপী আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা— এই তিন ক্যাটাগরিতে দেশের মোট ৫৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। চূড়ান্ত পর্বে স্কুল ক্যাটাগরিতে বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজকে হারিয়ে মুগদা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কলেজ ও ওপেন ক্যাটাগরিতে মনিপুরী স্কুল ও কলেজকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় নটর ডেম কলেজ। মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসাকে হারিয়ে স্বাগতিক তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা, টংগী শাখা চ্যাম্পিয়ন হয়।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মাদ শামসুল আলম, নবনির্বাচিত ডাকসু ভিপি সাদেক কায়েম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, এবং আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ সাঈদ। মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক নূরুন্নবী মানিকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিল্লাত ছাত্র সংসদের সভাপতি ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ড. মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী। এছাড়াও, মুফাসসির জাকির হোসাইন শেখ, মুফাসসির আবুল কাশেম গাজী, মহাদেশ আব্দুর গফফার, মুফতি মহিউদ্দিন, মুফতি শরিফুল ইসলামসহ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, কওমি-আলিয়ার ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে আপন করে নিতে হবে। আমাদের গন্তব্য অনেক দূর এবং সে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মাদ শামসুল আলম বলেন, এই মাদ্রাসা থেকে একঝাঁক মেধাবী আলেম দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আদর্শিক ও নৈতিকভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ ড. খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, সব বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও তা’মীরুল মিল্লাত বারবার জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে। এখানকার ছাত্ররা অতীতে সব গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেশের জন্য অবদান রাখবে।

অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ছাত্র সংসদের ভিপি হাফেজ আব্দুর রহমান, জিএস তোফায়েল আহমাদ এবং এমডিসির পরিচালক মিনহাজুল ইসলাম।