
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় জামায়াতের নির্বাচনী প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ঝুঁলানোকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দুই দলের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। এদিকে জামায়াতের নেতাকর্মীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সোমবার মধ্যরাতে দেবীগঞ্জ সদর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এমনকি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে তারা। ঘটনার কেন্দ্র উপজেলার চেংঠী হাজরাডাঙ্গা ইউনিয়নের রথবাজার এলাকা।
অভিযোগে জামায়াত নেতারা দাবি করেন গত ১০ অক্টোবর বিকেলে ওই এলাকায় জামায়াতের প্রতিক দাঁড়িপাল্লা ঝুলানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বাধা ও হুমকির শিকার হয়ে ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম থানায় অভিযোগ করেন। এতে তারা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। সোমবার রাতে রথবাজার মসজিদে এশার নামাজ পড়ার পর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আবু বক্কর ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামসহ ৬ জনকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি মাস্টার ডেকে বাজারের একটি চায়ের হোটেলে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাদের অবরুদ্ধ করে মারপিট করা হয়। এক পর্যায়ে অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে জামায়াত নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তারা ঘটনায় জড়িত বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পঞ্চগড়ের সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়ার নেতৃত্বে থানা ঘেড়াও করে বিক্ষোভ করে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিএনপি। তাদের দাবি এমন কিছু হয় নি। কেবল দুইপক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়েছে বলে দাবি বিএনপি নেতাদের।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোহরাব আলী বলেন, সম্প্রতি শিবিরের এক ছেলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট দেয় স্বৈরাচারের বাধা উপেক্ষা করে রথবাজারে দাঁড়িপাল্লা উত্তোলন। এই পোস্ট নিয়েই রথবাজারে জামায়াতের নেতাদের সাথে আমরা কথা বলি। তাদের পোস্টটি তুলে নিতে বলি। কিন্তু তারা তুলে নিবে না বলে আমাদের জানিয়ে দেয়। দুইপক্ষের মধ্যে উচ্চস্বরে বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে আমরা চলে আসি। নেতাকর্মীদেরও শান্ত থাকতে বলি। পরে জানতে পারি বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা এসেছেন এবং দেবীগঞ্জে গিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা যেসব অভিযোগ করছে এমন কিছুই ঘটেনি।
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পঞ্চগড়ের সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়া বলেন, দাঁড়িপাল্লা প্রতিক ঝুলানোকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীরা আমাদের ৬ জন নেতাকর্মীর উপর হামলা করে ৪ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। রাত ১১ টায় আমাদের লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই আমরা মামলার অভিযোগ দিয়েছি। এখনো মামলা নথিভুক্ত করা হয়নি।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা বলেন, ফেইসবুকে কমেন্ট ও দাঁড়িপাল্লা প্রতিক উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কাছে খবর আসে জামায়াতের নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমরা তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় অবরুদ্ধ না তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে আমরা দুইপক্ষকেই চলে যেতে বলি তারা চলে যায়। তারপরে নানা অভিযোগ তোলে বিক্ষোভ করে জামায়াত নেতাকর্মীরা। তারা একটি অভিযোগও দিয়েছে। আমরা তদন্ত করছি।