
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিভিন্ন দূতাবাস আর আন্তর্জাতিক সংস্থার বৈঠক এখন নিয়মিত ঘটনা। এসব বৈঠকে পররাষ্ট্রনীতি, নারী স্বাধীনতা আর দেশ নিয়ে জামায়াতের ভাবনা জানতে চাইছেন বিদেশিরা। দলটির নেতাদের দাবি, বিদেশিদের ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। আর আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন সব দলের সঙ্গে কথা বলে ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ বোঝার চেষ্টা করছে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
বিগত এক দশকের বেশি সময় খারাপ সময় পার করে আসা বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর অবস্থার পরিবর্তন ঘটে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে।
দীর্ঘদিনের জোট সঙ্গীদের থেকে বের হয়ে রাজনীতির সমীকরণে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করে যাচ্ছে দলটি। ডাকসু ও জাকসু ভোটে ছাত্র শিবিরের বড় জয়ের পর এবার চোখ সংসদ নির্বাচনে। এ লক্ষ্যে বেড়েছে কূটনৈতিক তৎপরতায়ও।
পূর্ব থেকে পশ্চিম গেলো ২ মাসে অন্তত ৩৪ দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও ৭০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াত ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্ব। যেখানে আগামী নির্বাচন, মানবাধিকার, পররাষ্ট্রনীতিসহ বেশ কিছু বিষয়ে কথা হয়েছে দু’পক্ষের।
জামায়াতের এই শীর্ষ নেতার দাবি, এসব বৈঠকে জামায়াত সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পাল্টেছে বিদেশিদের।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, আমার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা যদি আমার না থাকে, সেটি যদি অন্য জায়গা থেকে ঠিক করে দেয়া হয় বা নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে তো আমার কিছুই থাকল না। আমাদের দেশের স্বার্থ বজায় রেখে যাতে তাদের সঙ্গে আমাদের একটা সমতার সম্পর্ক হয়। এর মানে এই নয় যে, আমার স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে, অন্যের স্বার্থ রক্ষা করে ক্ষমতায় যাব আর আসব টিকে থাকব, এ নীতিতে জামায়াত বিশ্বাসী নয়।
আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসী বলছেন, ক্ষমতা বা বিরোধী দল যেখানেই থাকুক দল হিসেবে জামায়াতকে বোঝার চেষ্টা করছে বিদেশিরা। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছেন, কূটনীতিকরা।
অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, তাদের মিশন, ভিশন, বাংলাদেশের জন্য ওদের কি প্ল্যান আছে এটাই হয়ত ওরা ওখানে তাদের (জামায়াত) জানাতে চাচ্ছে। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কারণে রাজনৈতিক হোক, অর্থনৈতিকভাবে হোক বা নিরাপত্তাজনিত কারণে হোক বাংলাদেশের সঙ্গে কিন্তু এদের (জামায়াত) এক ধরণের সম্পর্ক আছে। তার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইচ্ছুক, তারা কিন্তু নির্বাচনের আগে কূটনীতিবিদদের সঙ্গে উঠা-বসাটা কিন্তু বেড়ে যায়।
শুধু জামায়াত নয়, নির্বাচনের আগে বিএনপি, এনসিপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছে, প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা।