
বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণসহ তিন দফা দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যরা।
শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে লংমার্চের ঘোষণা করেন সংগঠনের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। সরকারকে আমাদের দাবি মানতেই হবে। এখন আর অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। যতক্ষণ দাবি না মানবেন, ততক্ষণ আমরা সচিবালয় ঘেরাও করে রাখব।
তিনি আরও বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আহ্বান আসছে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার। এখন সরকারের আর কোনো কারণ নেই বিলম্ব করার। আলোচনা চাইলে করতে পারেন, কিন্তু চুপ থাকা বা সময়ক্ষেপণ আর চলবে না।’
দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমরা সরকারকে বলেছিলাম, আলোচনা করুন, সিদ্ধান্ত জানান। প্রজ্ঞাপন জারি হতে যদি একদিন দেরি হয়, তাতেও সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের অন্ধকারে রাখা যাবে না। পরিষ্কারভাবে জানাতে হবে, সরকার আমাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যখন আমরা প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিলাম, তখন সরকারি পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব বিদেশে, তারা ফিরলে আলোচনা হবে। কিন্তু আজ শুনছি, তাদের অনুপস্থিতিতেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় যদি উপদেষ্টা-সচিব ছাড়া বৈঠক করতে পারেন, তাহলে হাজার হাজার শিক্ষককে তিন দিন রাস্তায় কষ্ট পেতে হলো কেন?’
তারপর তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা যেন সেই প্রবাদ ঠেলার নাম বাবাজি! শিক্ষক সমাজকে বারবার ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, অথচ আমাদের দাবিগুলো একটিও অযৌক্তিক নয়।’
দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। একই কাজ করেও বেতন, ভাতা ও সুবিধার ক্ষেত্রে তারা বঞ্চিত। ফলে শিক্ষা খাতে ন্যায়সংগত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে দ্রুত এই তিন দাবির বাস্তবায়ন জরুরি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো ও অন্যান্য সুবিধার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেছে। তবে জাতীয়করণ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে আন্দোলনকারীদের মতে, সময় এসেছে কথার নয়, প্রজ্ঞাপনের।
অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী শেষ পর্যন্ত বলেন, ‘আমরা শিক্ষা দিই, সমাজ গড়ি। আজ যদি শিক্ষক সমাজকেই অবহেলা করা হয়, তাহলে উন্নয়নের ভিত্তিটাই দুর্বল হয়ে যাবে। তাই এই দাবিগুলো মানতে হবে, এটাই এখন সময়ের দাবি।’