Image description

ময়মনসিংহে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও আওয়ামীপন্থি শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির সমাধান হলেও আবারও অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। জেলা মোটরযান মালিক সমিতির একাংশের প্ররোচনায় রোববার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।

 

জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জুলাই আন্দোলনের শহিদ রিদওয়ান হোসেন সাগর হত্যা মামলার আসামি আমিনুল হক শামীমের মালিকানাধীন ‘ইউনাইটেড সার্ভিস’ এর ১৬টি বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ায় ষড়যন্ত্র করে ঢাকার পরিবহন মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনকে ব্যবহার করে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে। বর্তমানে ময়মনসিংগের সাথে ঢাকার সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

 

অভিযোগে আরও জানা যায়, গত শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে ইউনাইটেড বাসের লাইনম্যান অরুণ চন্দ্র দাস জুলাই আন্দোলনের কর্মী আবু রায়হানকে গায়ে হাত তুলে অপমান ও আহত করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের বীর যোদ্ধাগণ’ ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এবং সাগর হত্যা মামলার আসামি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তারসহ তার মালিকানাধীন সব বাস বন্ধের দাবি জানান।

 

শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পাল্টা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস মোড়ে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। এতে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিকেলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অন্যান্য বাস চলাচল শুরু হলেও ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ থাকে কিন্তু অন্যান্য পরিবহনের বাস চলাচল চালু থাকে। কিন্তু রাতে আওয়ামীপন্থিদের ষড়যন্ত্রের কারণে রোববার ভোর থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জসহ পাঁচ জেলার বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকায় কর্মরত হাজারো মানুষ বিকল্প যানবাহনে রাজধানীতে ফেরার চেষ্টা করছেন।

 

ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম জানান, আমিনুল হক শামীম পরিচালিত ১৬টি বাস বন্ধ এবং একটি মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল কিন্তু ঢাকার কয়েকজন নেতা তা মানছে না।

 

তিনি আমারদেশকে আরও বলেন, ফ্যাসিস্টদের দোসররাই পুরো ঘটনার পেছনে জড়িত। কোহিনূর, টিটু ও জসিম-এই তিন ভাই পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। কোহিনূর কিছুদিন অবৈধভাবে সমিতির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। পরে সরকারিভাবে আমাকে দায়িত্ব দেয়ার পর তারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালায়।

 

তিনি আরও বলেন, অরুণ চন্দ্র দাসের সঙ্গে যে ঘটনা শুক্রবার ঘটেছে, তার পরদিনই এনসিপির নেতারা যে ব্যানার নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি করেছে, সেই ব্যানার তারা শুক্রবারেই কোথা থেকে পেল? শুক্রবারে তো সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। এর মানে, তারা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এই ব্যানার প্রস্তুত রেখেছিল। শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি আশা করছি।

 

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করলেও ঢাকার পরিবহন ফেডারেশনের অনড় অবস্থানের কারণে বাস চলাচল কবে স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।