
বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল–আশুগঞ্জ) এ ধানের শীষের প্রার্থী হতে পারেন মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব। তিনি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এবং হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
স্থানীয়ভাবে একজন বরেণ্য আলেম ও ইসলামি বক্তা হিসেবে তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এ আসনে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আসনটি তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তবে তার প্রার্থীতা এখনো নির্ভর করছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে পুনরায় যুক্ত হওয়া-না-হওয়ার সিদ্ধান্তের ওপর।
উল্লেখ্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (উবায়দুল্লাহ ফারুক–আফেন্দি) ২০২১ সালে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসে। তবে সংগঠনটির বর্তমান নেতৃত্ব আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত এক বছরে জমিয়ত ও বিএনপির লিয়াজো কমিটির মধ্যে জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সম্প্রতি সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগকালে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, ‘১৯৮১ সালে হাফেজ্জী হুজুরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় থেকেই আমি রাজনীতির ময়দানে আছি। পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে মুফতি আমিনীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছি। এই এলাকার মানুষ আমাকে ভালোভাবে চেনে, আমি প্রতিটি গ্রামে গিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, জাতীয় নির্বাচনে আমি ভালো ফলাফল বয়ে আনতে পারব।’
তবে এই আসনে ধানের শীষের প্রতীকে লড়তে চান বিএনপি’র আরও নয়জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন—ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, কেন্দ্রীয় বিএনপি সদস্য শেখ মো. শামীম, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএন তরুণ দে, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি শাহজাহান সিরাজ, সাবেক ছাত্রদল নেতা আহসান উদ্দিন খান শিপন, ডা. নাজমুল হুদা বিপ্লব, সরাইল উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. আনিসুল ইসলাম ঠাকুর ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসন সীমানা পুনর্র্নিধারণ নিয়ে চলমান বিতর্ক ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা বিভক্তি তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে বিএনপির একাধিক আগ্রহী প্রার্থী থাকায় মনোনয়ন সংকট ও অভ্যন্তরীণ জটিলতাও তৈরি হয়েছে।
যদি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবকে বিএনপি জোট থেকে ধানের শীষের প্রার্থী করা হয়, তাহলে তা জোটের ঐক্য ও পারস্পরিক আপসের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।
২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে চারদলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী ধানের শীষ প্রতিকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আলেম–ওলামা ও ইসলামি জনতা অধ্যুষিত সরাইল–আশুগঞ্জ আসনে একজন আলেম প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার মাধ্যমে বিএনপি ধর্মীয় ভোটব্যাংকে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে।