
দীর্ঘ ছয় বছর পর গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। নির্বাচনের পর দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকা ডাকসু ভবনের জরুরি সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ডাকসুর নবনির্বাচিত নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এবং বাজেট বরাদ্দ করে।
তবে এ বাজেট বরাদ্দকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ডাকসু নেতাদের চাপের মুখে প্রশাসন এ বরাদ্দ দিয়েছে। অন্যদিকে ডাকসু নেতারা বলছেন, কোনো ধরনের চাপ নয়, নির্ধারিত নিয়মনীতি মেনেই বাজেট বরাদ্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভবনটিকে কার্যকরভাবে ব্যবহার উপযোগী করতেই বারবার ফোন করা হয়েছে, এসির জন্য নয়। তারা সংস্কারের প্রস্তাব দেন এবং কাজের পরিবেশ নিশ্চিতে, যা প্রয়োজন সেটা প্রশাসন করছে।
এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন শিবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ডাকসু সদস্য সর্বমিত্র চাকমা। বুধবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেছেন, ‘শুধু এসি নয়, আমাদের ডাকসু ভবনের পরিত্যক্ত বিশাল খোলা ছাদটাও চমৎকারভাবে সাজাব তিনটা থিমে।’
তিনি বলেন, ‘ডাকসুকে আরও আধুনিক করব, যাতে শিক্ষার্থীদের প্রতিটা সেকেন্ড ডাকসুতে যাতায়াত থাকে, ডাকসুর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সেতুবন্ধনটা আরও দৃঢ় হয়। ডাকসু হবে শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। একটা কলম হারালেও যেন ডাকসুতে এসে বলে, ভাই, আমার কলম হারিয়েছে।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ‘ডাকসু অনেক দিন বন্ধ থাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ভাঙা টেবিল, ওয়াশরুমগুলো ব্যবহার করার উপযোগী ছিল না। কনফারেন্স রুমে সাউন্ড সিস্টেম নেই। মানে সম্পূর্ণ অকার্যকর অবস্থা। এ জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারকে জানাই। তারা হিসাব করে নিয়ে গেছে কয়টা টেবিল, চেয়ার, সোফা লাগবে এবং এগুলো নতুন দেওয়ার জন্য অফার করেছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, যেগুলো আগের জিনিস পালিশ বা রিপিয়ার করে ব্যবহার করা যাবে, সেগুলো পালিশ করে দিলেই হবে। সংস্কার করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান দিয়েছে। সে হিসেবে তারা বাজেট করে, অ্যাকাউন্ট সিস্টেম থেকে হিসাব করে দেয়। মানে এটা সম্পূর্ণ প্রসেস অনুযায়ী হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি, দ্রুত অফিসে বসার জন্য যা করা লাগে করে দেন। এ কাজগুলো দেরি হওয়ার কারণে আমি বারবার ফোন করেছি। ছাত্ররা আসতেছে এক মাস হয় গেল, তা-ও কাজ শেষ হয়নি। এগুলোর জন্য যা যা লাগে তারা সব কিছু যুক্ত করেছে। তারা আরও নতুন সোফা দিতে চেয়েছিল। আমরা বলেছি, পুরোনোগুলো পালিশ করে দিলেই হবে। এর বাইরে হলে ছারপোকামুক্ত করার জন্য আজকে থেকে কাজ শুরু করেছি। আগামী সপ্তাহে পুরো ক্যাম্পাস ক্লিন করার উদ্যোগ নিচ্ছি। রিডিংরুমগুলোতে এসি দেওয়ার কাজ শুরু করছি। এ ছাড়া আমাদের কালচারাল প্রোগ্রাম জারি রয়েছে।’
সাদিক কায়েম বলেন, ‘মেডিকেল ক্যাম্পকে আমরা আধুনিক করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। মেডিকেলকে উন্নত করার জন্য যে যন্ত্রপাতিগুলো লাগে, সেগুলো ম্যানেজ করছি। আমরা যে কমিটমেন্টগুলো শিক্ষার্থীদের দিয়েছি, সেগুলোর জন্য কীভাবে রিসোর্সগুলোকে কানেক্ট করা যায়, সেগুলোর জন্য কাজ করছি। অফিসে কাজের পরিবেশের জন্য আমরা যা করছি, এগুলো তো আমরা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি না। এটা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র এবং এর পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া প্রশাসনে দায়িত্ব।’