Image description

সিলেট-২ আসন নিয়ে চলছে নানা আলোচনা, জল্পনা। মাঠেও সমালোচনা তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সিলেটের টিভি মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। ইমজা’র কার্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে উঠে আসে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্র-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ূন কবিরের নাম। এক প্রশ্নের উত্তরে লুনা জানান- ইলিয়াস আলী গুমের পর দলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশে তিনি ইলিয়াসের হয়ে মাঠে নামেন। এখনো মাঠেই আছেন। কাজ 
করছেন। তিনি বলেন- দলের নির্দেশে নির্বাচনের জন্যও কাজ করছেন। নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে রয়েছে। তবে প্রবাসী প্রার্থী সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্যই করেননি। বলেন- বিএনপি সিলেট-২ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করুক। এরপর আপনাদের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তাহসিনা রুশদীর লুনা জানান- আওয়ামী লীগ ভোট কোথায় যাবে সেটি আওয়ামী লীগ জানবে। এখানে তো বিএনপি’র তরফ থেকে কোনো মন্তব্য করা যায় না। তারা ভোটের মাঠে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এতে বিএনপি’র ভোটাররা বিভ্রান্ত নয়। বিএনপি’র ভোট বিএনপি’র। গত ১৫ বছর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ভোট দিতে পারেননি। এবার ভোটাররা অনেক বেশি সচেতন। কেউ বিভ্রান্ত করতে পারবে না বলে জানান- তিনি। ইলিয়াসপত্নী লুনা স্বামীর অবর্তমানে ২০২১২ সালের প্রথমার্ধ্বে সিলেট-২ আসনে প্রথমে দলীয় নেতাকর্মীর অভিভাবক হিসেবে নামেন। নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে যেতে হয়েছে তাকে। প্রতিকূল পরিবেশেও তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গ ছাড়েননি। নেতাকর্মীদের তিনি আগলে রাখেন। শক্ত হতে হাল ধরার কারণে বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরে একত্রিত হয়েই কার্যক্রম চালাচ্ছে। কোনো কোন্দল নেই। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপি’র মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই নির্বাচনে সরকারের তরফ থেকে নানা নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হতে পারেননি। এবার নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়ম শুরু করেছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। প্রথমেই তিনি টিভি মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় লুনা জানান- স্বামী এম. ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পর নেতাকর্মীদের প্রয়োজনে তিনি মাঠে নেমেছিলেন। এরপর তিনি রাজনীতিতে পথচলা শুরু করেন। এখন বিএনপি’র দলীয় পদে রয়েছেন। এতদিন তিনি ট্রমার মধ্যে ছিলেন। স্বামী নিখোঁজের পর সন্তান, পরিবার ও নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এবার নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিক, সুশীল সমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। 

তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়: বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নে ‘আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা ও ভাবনা’- শীর্ষক মতবিনিময় সভা করেছেন তাহসিনা রুশদীর লুনা।  স্থানীয় বৈরাগী বাজারস্থ একলিমিয়া দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ইউনিয়ন ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল। সভায় এলাকার কয়েক শতাধিক তরুণ-তরুণী অংশ নেন এবং নানা প্রশ্ন ও চিন্তার কথা তুলে ধরেন। এতে লুনা বলেন- বর্তমান প্রজন্মের চিন্তা ও প্রশ্নের উত্তর খোঁজার মধ্য দিয়েই তৈরি হবে নতুন নেতৃত্ব। রাজনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে মূল্যবোধ ও নৈতিকতার ওপর। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সেই নতুন প্রজন্মের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়ভাবে কাজ করছে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হবে। আর এরমধ্যে আছে আদর্শভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি সৃষ্টি, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তরুণদের কাজে লাগানো, রাস্তাঘাট অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, মুদ্রাস্ফিতি কমিয়ে দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নেয়া, দুর্র্নীতি প্রতিরোধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ, নীতিমালা প্রণনয়নের মধ্য দিয়ে যুবকদের কাজে লাগানো, বেকার ভাতা চালু, সরকারি সেবা বিকেন্দ্রীকরণ, শ্রমজীবীদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত, বিচার ন্যায় বিচার নিশ্চিত, স্বাস্থ্য ও সার্বজনীন চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, নারীদের সুরক্ষা, কৃষকের উৎপাদন ও বিপণনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়াসহ সকল কিছু বাস্তবায়ন করবে। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে তরুণদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আগামীর প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। রামপাশা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. রাজন খানের সভাপতিত্বে সভায় বিভিন্ন প্রশ্ন ও মতামত তুলে ধরেন কলেজ শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার, এহসানুল হক মিরাজ, সাদিকুর রহমান,  নাহিদ আহমদ,  সাইদুল ইসলাম,  ফাহাদ আহমদ, নাঈম আহমদ প্রমুখ। সভায় উপজেলা ও স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পেশার তরুণ- তরুণীরা উপস্থিত ছিলেন।