Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (ডাকসু) জিএস ও ঢাবি শিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ ঢাকাকে (Global solidarity Hub) বৈশ্বিক সংহতির কেন্দ্র বানাতে হবে। পৃথিবীর যেখানেই মজলুম থাকুক না কেন, অত্যাচারের ঘটনা ঘটুক না কেন ঢাকা যেন সংহতির কেন্দ্র হয়।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আয়োজনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রতি সংহতি ও ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা যাত্রায় সমর্থন জানিয়ে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানাই শুধু অল্প কিছু ত্রাণ সহযোগিতা পাঠালেই, কিছু কালচারাল এক্টিভিস্ট গেলেই গাজা ও ফিলিস্তিনবাসীর চিরস্থায়ী সমাধান কখনোই হবে না। এর আগেও বহু ত্রাণ গিয়েছে। বহু আশ্বাস আমরা দেখেছি। বহু রাষ্ট্র প্রধান বহু প্রত্যাশা দেখিয়েছে কিন্তু গাজা বাসীরা মুক্তি পায়নি। তারা আবারও নিহত হয়েছে। এখন যে খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে গাজাবাসী ইতিপূর্বে এমন খারাপ অবস্থা আমরা দেখিনি।

ফরহাদ বলেন, ফিলিস্তিনে দীর্ঘ দিন ধরে আক্রমণ চলছে, সেদিকে আক্রমণ হয় আমরা এদিকে প্রতিবাদ জানাই। নানা ঘটনা আমাদের অজানা রয়ে যায়। সেই ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর থেকে আজকে পর্যন্ত শুধু প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী ৬৬ হাজার ৬৫ জন শহীদ হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার হচ্ছে শুধু মাত্র শিশু এগুলো প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী। এর বাইরে আরো কত শহীদ হয়েছে আল্লাহ ভালো জানেন। যেখানে সংবাদ কর্মী সংবাদ সংগ্ৰহ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন ৩৬৫ জন। এতো মাত্রায় শহীদ এ অল্প সময়ে সেখানে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যারা সহযোগিতা করতে গেছেন এটা খুব‌ই অল্প মাত্রায় সহযোগিতা। তাদের প্রতি আমাদের সাপোর্ট ও সহযোগিতা থাকবে যারা এমন সাহসিকতা দেখিয়েছেন। 

তবে এটা দিয়ে ফিলিস্তিনের আসল মুক্তি হচ্ছে না। দিন শেষে শহীদ ও শাহাদাতের ঘটনা এখনও ঘটছে, সেখানে এখনো মানুষ শহীদ হচ্ছেন। এ যে এই বিষয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ এতে সমাধান হচ্ছে না। ট্রাম্প আরেকটা ষড়যন্ত্র এঁকেছে। আপনারা দেখেছেন তারা বিশটি প্রস্তাব দিয়েছেন যার মধ্যে একটি হচ্ছে যুক্তরাজ্যেল (ইউকে) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী যিনি ইরাকে গণহত্যার জন্য দায়ী তাকে গাজার প্রশাসন হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। কী ঘৃণা একটি প্রস্তাব। আমরা এ প্রস্তাবনার নিন্দা জানাচ্ছি। বাংলাদেশ সরকার‌কেও এ প্রস্তাবনার নিন্দা অবশ্যই জানাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এটা কারা করেছে খতিয়ে দেখা দরকার। আপনারা দেখেছেন ইজরায়েলে এখন শুধু তাদের আক্রমণ ফিলিস্তিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি‌। আশেপাশের দেশগুলোতেও আক্রমণ চালিয়েছে। এ আগ্ৰাসন একটি গ্লোবাল আগ্ৰাসন। তাই এটি শুধু গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে করার কিছু নেই। আমরা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সাথে সংহতি জানাচ্ছি। সেই সাথে এ ক্ষুদ্র সমর্থনে উৎফুল্ল না হয়ে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।

 

বাংলাদেশে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিনে ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চলছে। আমরা দেখছি সেখানে অগণিত শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন থেকে সাহায্য পৌঁছানোর কথা ছিল সেগুলো পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না। এসব মানুষদের চিকিৎসা, খাদ্য, মানবাধিকারের যে অধিকার ছিল তা খর্ব করা হয়েছে। আমার এমন বর্বরোচিত গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান করে ধিক্কার জানাচ্ছি। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশ্বনেতাদের ধিক্কার জানাই। 

তিনি বলেন, আমার চেয়েছিলাম বিশ্বের সকল দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াবে কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম বিশ্বের কিছু মানুষ যখন সেখানে সংহতি জানাতে গিয়েছে তাদেরকেও সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আপনারা এমন কার্যক্রম করে কোনোদিন ফিলিস্তিনের মনবলকে নষ্ট করতে পারবেন না। ফিলিস্তিনিরা যে চেতনার কারণে বেঁচে আছে তা হচ্ছে ইমান। আমরা দেখছি এখন পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষ ও মুসলিমরা এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে। আমরাও বাংলাদেশ থেকে একাত্মতা পোষণ করছি।