
পটুয়াখালীতে এক কলেজছাত্রী ও তার বৃদ্ধ বাবাকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে জেলা ছাত্রদল ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় ছাত্রদলের দু’নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী গলাচিপা ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে তার বাবাকে (৭০) নিয়ে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সময় তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘বাবার স্লুইস বাজারে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি বাবাকে সহযোগিতা করেন। বুধবার দুপুরে স্থানীয় বিএনপির নেতা রেজাউল মাতব্বরের ছেলে সায়মুন মাতব্বর (২৩) তাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন। তার প্রতিবাদ করায় সায়মুন লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এ সময় বাবা প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর সায়মুনের সঙ্গে যোগ দেন চরমন্তাজ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মিঠুন। হামলার সময় সায়মুন ও মিঠুন তার ওড়না এবং বাবার লুঙ্গি টেনে খুলে নেয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে মারধরের কারণে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়। এতে তিনি একটি চোখ দিয়েও দেখতে পাচ্ছেন না’।
গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তুষার আহম্মেদ বলেন, ভূক্তভোগীর শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে পুলিশি অনুমতি ছাড়া বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়’।
ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে মামলা না করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে; বরং সালিশি মীমাংসার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ও সালিশ মীমাংসার কথা অস্বীকার করে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল মুন্সি বলেন, ‘তরুণীর গায়ে হাত দিয়ে বড় ধরনের অপরাধ হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই’।
এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন্দ্রীয় নির্দেশে জেলা ছাত্রদল চরমোন্তাজ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি তারিকুল ইসলাম মিঠু এবং ছাত্রদল নেতা সায়মুন ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা তারিকুল ইসলাম মিঠুন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই মেয়ে আমার চাচিকে গালাগাল করেছিল। তাই চুপ থাকতে পারিনি। তবে ওই মেয়ে ও তার বাবা আমার চাচাতো ভাই সায়মুনকে আঘাত করেছে। সায়মুন এখন হাসপাতালে ভর্তি।’
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাওলাদার বলেন, ঘটনাটি শোনার পর ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।