
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণে সংগঠনটি এবং এটির কাঠামো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে আজ (রবিবার)। কিন্তু বাগছাস নেতৃবৃন্দ বলছেন, সংগঠন বিলুপ্তির প্রশ্নই আসে না। তবে কাঠামো রিফর্মেশন বা পুনর্গঠনের চিন্তা করা হচ্ছে। তাছাড়াও এ বাগছাসকে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম এনসিপির ছাত্র সংগঠন বলে অভিহিত করার ব্যাপারেও আপত্তি জানিয়েছেন সংগঠন সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সম্প্রতি ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। এসব নির্বাচন বা এর আগে থেকেই আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি, আমাদের সাংগঠনিক কিছু দূর্বলতা রয়েছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ খুবই নবীন একটা সংগঠন। আমাদের দূর্বলতাগুলো দূর করার চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। এ প্রেক্ষিতে আমাদের কর্মসূচিগুলো পুনর্মূল্যায়ন ও সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সংগঠন বা কাঠামো বিলুপ্ত হওয়ার কোনো আলোচনাই হয়নি। আমরা মূলত পুনর্গঠন, পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্বিবেচনা ইত্যাদি নিয়ে ভাবছি।
এর আগে জাহিদ আহসান নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে লেখেন, সংগঠন হিসেবে আমরা নবীন, আমাদের অভিজ্ঞতাও কম। মাত্র ছয়মাসের মাথায় ছাত্রসংসদ নির্বাচনগুলো সামাল দিতে হচ্ছে। ফলতঃ আমরা নিজেদের কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতা, কাঠামোগত ভুল দেখতে পাচ্ছি। সেগুলোকে চিহ্নিত করে পুনর্গঠন ও কর্মসূচির পুনর্মূল্যায়ের কথা ভাবছি। নেতৃবৃন্দের মধ্যে সেই আলোচনা চলমান। কিন্তু, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বিলুপ্ত হবে - এমন কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি হয়, তাহলে আমরাই জানাবো। এখন অবধি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বিলুপ্তের কোনো আলোচনা নাই। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বিলুপ্ত হচ্ছে মর্মে যেই খবর ছাপা হয়েছে তা ভুল। সেখানে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কারো সাথে এ ব্যাপারে কোনো কথা না বলেই শিরোনাম করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাবি শাখার আহবায়ক আব্দুল কাদের দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা সংগঠনের সদস্য হয়েও বিলুপ্তির খবর জানি না। এ সংগঠন আমাদের, সিদ্ধান্তও আমরা নেব। এনসিপি নেবে না। সংগঠনের সমস্যাগুলো সমাধানে কী করা যায়, সেগুলো নিয়ে আমরা ভাবছি। এখানে এনসিপি কোনোভাবে যুক্ত নয়।
এদিকে, এক ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, বিবিসি বাংলা নিউজ করেছে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ না কি বিলুপ্ত হয়ে যাবে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ আমি সংগঠনের মুখপাত্র হয়ে এই খবর জানি না। এই ধরনের মিসলিডিং খবর তৃণমূলে খুব বাজে প্রভাব ফেলে। তারা জেনে-বুঝেই এমন নিউজ করেন কি না আমার জানা নেই। কারণ আমাদের সংগঠনের আহ্বায়ক বা সদস্য সচিবের সাথেও এই বিষয়ে কোনো আলাপ তারা করেন নাই।
তিনি আরও বলেন, ডাকসুর আগে থেকেই সংগঠন রিফর্ম করা নিয়ে আলাপ চালাচ্ছি। কিভাবে কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবছি। মাঝখানে ডাকসু, জাকসু চলে আসায় সেই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন আবার রাকসু, চকসুর আলাপ চলে। এরমধ্যেই রিফর্মেশন প্রসেস নিয়ে কাজ চলমান। আমাদের সংগঠনের বয়স কম, মাত্র কয়েকমাস হয়েছে। এখনো চেইন অফ কমান্ড ঠিক হয় নাই, রাজনৈতিক কর্মশালা পর্যন্ত করা হয়নি। আমাদের পূর্বের বহু ভুলভ্রান্তি আছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন অ্যাকোমোডোট করতে হয়েছে পরিস্থিতির কারণে। সবকিছু আমলে নিয়ে রিফর্ম করার জন্য আমরা বধ্য পরিকর। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় সব সদস্যই মৌখিক সম্মতি প্রদান করেছেন। সেই সাথে, আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিও রিফর্ম করার দিকে যাব।