
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চরএলাহী ঘাট দখল করে চাঁদাবাজির দায় থেকে মুক্তি পেতে নিয়ম লঙ্ঘন করে নোয়াখালী জেলা বিএনপির প্যাডে গণমাধ্যমে প্রতিবাদ লিপি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নুরুল আলম সিকদার নামে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতারা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নুরুল আলম সিকদারের স্বাক্ষর করা প্রতিবাদ লিপি দু’টি নিজের ফেসবুকে দেওয়ার পর আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক।
প্রকাশিত প্রতিবাদ লিপিতে দেখা যায়, নোয়াখালী জেলা বিএনপির প্যাডে একাধিক গণমাধ্যমে নিজ স্বাক্ষরিত চাঁদাবাজির সংবাদের প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন নুরুল আলম সিকদার। এতে তিনি নিজেকে বিএনপির তৃণমূলের নেতা হিসেবে তাকে নির্দোষও দাবি করেন।
এরআগে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের চরএলাহী ঘাট প্রকাশ চরলেংটা ঘাট দখল করে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে দখলবাজি-চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদারের বিরুদ্ধে। এ ঘাটের দখল ও আধিপত্য নিয়ে উপজেলায় বিএনপির ও যুবদলের দুই নেতা খুন এবং অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে। সংগঠিত রক্তক্ষয়ী এসব ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
ক্ষমতার অপব্যাবহার করে ও দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে দলীয় প্যাড ব্যাবহার করার কারণে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক মহলসহ সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে নুরুল আলম সিকদারের বিরুদ্ধে। পরে তিনি তার নিজস্ব ফেসবুক থেকে একাধিক সংবাদপত্রে দলীয় প্যাডে প্রেরিত প্রতিবাদ লিপি সরিয়ে নেন। এর পরই দলীয় প্যাড ব্যাবহার করা ভুল হয়েছে মর্মে দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন।
নুরুল আলম সিকদার তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে আমি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়ে ছিলাম। সেখানে আমার দলীয় প্যাড ব্যবহার করা সঠিক হয়নি। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি জেলা বিএনপির নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
নিয়ম লঙ্ঘন করে জেলা বিএনপির দলীয় প্যাড ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রতিবাদ লিপি প্রেরণের বিষয়ে জানতে চাইলে, নুরুল আলম সিকদার বলেন, আমি দলীয় প্যাড ব্যবহার করেছি এটা সত্য। এটা আমি পারি কি পারি না সেটা দল দেখবে। এ নিয়ে কিছু হলে আমার দলের নেতারা আমাকে বলবে। কিন্তু এটা তো সাংবাদিকদের আমাকে প্রশ্ন করার বিষয় নয়।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ বলেন, জেলা বিএনপি এ ধরণের কোনো বিবৃতি দেয়নি। আর এ প্যাড জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করার অধিকার রাখে না। আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে অবহিত করবো।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ বলেন, দলীয় প্যাড এভাবে ব্যবহার করার নিয়ম নেই। বিষয়টি এখনো আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়া কেউ জেলা বিএনপির প্যাড ব্যবহার করতে পারেন না। নুরুল আলম সিকদার চরম অন্যায় করেছেন। এ বিষয়ে আমরা দলীয় ফোরামে যখাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
একই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না, আপনাদের কাছ থেকে জানলাম। তবে নোয়াখালী জেলা বিএনপির প্যাড শুধুমাত্র জেলা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবই ব্যবহার করতে পারবেন।