
সিনেমার মতোই রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন দক্ষিণ ভারতের তামিল অভিনেতা বিজয় থালাপাথি। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে বিশাল এক জনসভায় তার হিরোইক প্রবেশ যেন কোনো ব্লকবাস্টার সিনেমার দৃশ্যকেই মনে করিয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র তাকে দেখার টানেই দূর-দূরান্ত থেকে লাখো মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন ওই সমাবেশে। বিজয়কে ঘিরে ভক্তদের উচ্ছ্বাসে জনসভা মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল এক অভাবনীয় উন্মাদনায়, যা উপমহাদেশের সিনেমাপ্রেমীদেরও তাক লাগিয়েছে।
সিনেমার পাশাপাশি রাজনীতিতেও মনোযোগী হয়ে উঠেছেন এই ৫১ বছর বয়সী সুপারস্টার। কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ না দিয়ে তিনি নিজেই গঠন করেছেন তামিলাগো ভেটারি কাজাগম নামে একটি দল। দল গঠনের পর থেকেই তিনি পাচ্ছেন বিপুল সাড়া। গত ২১ আগস্ট ওই দলের প্রথম জনসভা করেন বিজয় থালাপাথি। কিন্তু সেখানে প্রোটোকল ভেঙে কিছু অতি উৎসাহী ভক্ত তার কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় দেহরক্ষীদের। একপর্যায়ে দেহরক্ষীরা ভিড় সামলাতে গিয়ে বেশ কয়েকজনকে বেপরোয়াভাবে সরিয়ে দেন। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় এক ভক্ত শরদ কুমারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
বুধবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ওই ঘটনার পর কুন্নাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন শরদ কুমার। মামলায় বিজয়ের দেহরক্ষীদের পাশাপাশি তাকেও আসামি করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কী ধরনের শাস্তি হতে পারে, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি।
রাজনৈতিক দল গঠনের পর থেকেই তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন থালাপাথি বিজয়। তিনি ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাদুরাই পূর্ব আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পাশাপাশি রাজ্যের ক্ষমতাসীন ডিএমকের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন তিনি। জনসভায় নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে ‘উগ্রবাদী’ আখ্যা দিয়ে আদর্শিক শত্রু হিসেবেও তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে কাঁচাথিবু দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ ফেরানো এবং তামিল জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেন বিজয়। তার এই বক্তব্যের পরই লাখ লাখ মানুষ স্লোগান দিয়ে সমাবেশ প্রকম্পিত করে তোলে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে, সিনেমার বাইরে রাজনীতিতেও তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি। তাই মাদুরাই শহরের জনসভাকে কেন্দ্র করে দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা অনেকেই ছোটখাটো ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন।