
ইরানের রিয়াল বৃহস্পতিবার প্রায় রেকর্ড নিম্নমানে নেমে এসেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় দেশগুলো জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে পারে, যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও অস্থির অর্থনীতিতে বড় চাপ ফেলবে।
২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে যুক্ত এই “স্ন্যাপব্যাক” প্রক্রিয়া ৩০ দিনের মধ্যে কার্যকর হতে পারে। এটি চালু হলে বিদেশে ইরানের সম্পদ ফ্রিজ হবে, অস্ত্রচুক্তি বন্ধ হবে এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সীমিত করা হবে।
বৃহস্পতিবার তেহরানে ডলারের বিপরীতে রিয়াল ছুঁয়েছে প্রতি ডলারে ১০ লাখেরও বেশি; ২০১৫ সালে এই হার ছিল ৩২ হাজার। এপ্রিলে রিয়াল সর্বনিম্ন দর ছুঁয়েছিল ১০ লাখ ৪৩ হাজার।
ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, জুনে ইসরায়েলি হামলা ও পরমাণু সংস্থার (IAEA) পরিদর্শন বন্ধ হওয়ার পর ইরান স্ন্যাপব্যাক সক্রিয় হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তখন ইসরায়েলি হামলায় শীর্ষ সামরিক নেতারা নিহত হন এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই গোপনে চলে যান।
সীমিত কূটনৈতিক তৎপরতা
প্রথমে ইরান এই হুমকিকে গুরুত্ব না দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে সীমিত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, “শুধু আলোচনা যুদ্ধ ঠেকাতে পারে না, কখনো কখনো যুদ্ধ অনিবার্য হয়।”
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণই মূল ইস্যু
যুদ্ধের আগে ইরান ৬০% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছিল—যা অস্ত্রগ্রেডের খুব কাছাকাছি। তাদের কাছে এমন মজুতও রয়েছে যা দিয়ে একাধিক পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব। ইরান দাবি করছে কর্মসূচিটি শান্তিপূর্ণ, তবে পশ্চিমা দেশগুলোর মতে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তাদের সক্রিয় অস্ত্র কর্মসূচি ছিল।
২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী, ইরান আইএইএ-কে বিশেষ প্রবেশাধিকার দিয়েছিল, যার মধ্যে ছিল ক্যামেরা, সেন্সর ও স্যাটেলাইট নজরদারি। তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে এসব কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইরান বলছে, হামলার আগে তারা ইউরেনিয়াম ও যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিয়েছে—যা নতুন, অঘোষিত স্থাপনাগুলোতে থাকতে পারে।
বুধবার আইএইএ পরিদর্শকরা রাশিয়ার সহায়তায় পরিচালিত বুশেহর পারমাণবিক চুল্লিতে জ্বালানি পরিবর্তনের সময় উপস্থিত ছিলেন।