Image description

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আগামীর নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে এবং দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের নিজের ইচ্ছানুযায়ী যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দেবে। তবে সর্তক করে দিতে চাই, আমরা যদি রাজনীতি করি এবং সেখানে প্রার্থী হই, আমাদের যেমন জবাবদিহিতা রয়েছে ভোটারদের কাছে, তেমনই ভোটারদেরও জবাবদিহিতা রয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমি যদি একজন প্রার্থী হই, আর আমার ভোটার যদি টাকা খেয়ে বা মিথ্যা প্রলোভনে অন্য জায়গায় ভোট দেয়, তবে আমি কিন্তু আমার ভোটারকে ছেড়ে দেবো না। এ জবাবদিহিতা গণতন্ত্রের পরস্পর উভয়মুখী। রাজনৈতিক নেতা ও ভোটারের জবাবদিহিতাই হবে সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কার এবং সত্যিকারের অর্থে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় নরসিংদীর শেখেরচর মাজার বাসস্ট্যান্ডে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পরিবারে সমবেদনা জ্ঞাপন ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল ও বিএনপির ত্যাগী নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মঈন খান বলেন, এ দেশের একটি সুবিধাবাদী শ্রেণি যারা গণতন্ত্রকে বিদায় দিয়ে এ দেশকে পিআর নীতিকরণ করতে চেয়েছিল ওয়ান ইলেভেনে। তারা সে সময় থেকে শুরু করে, যার ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ এ দেশে একটি নব্য বাকশাল সৃষ্টি করে পুনরায় একদলীয় শাসনের মাধ্যমে রাজনীতি, অর্থনীতি, উন্নয়ন, ভোটের অধিকার এবং এদেশের মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে একটি শাসক শ্রেণি সৃষ্টি করেছিল, যার নাম আমরা দিয়েছিলাম ‘স্বৈরাচার’। পুনরায় এ দেশে স্বৈরাচার ফিরে আসবে বলে কেউ যদি মনে করেন, তবে সেটা ভুল ভাবছেন।

তিনি বলেন, আমরা সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবো না, আগামীতে নতুন প্রজন্ম আসবে, ছাত্ররা আসবে। তবে শুধু ছাত্ররা আসলে হবে না, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসবে। আমরা তাদের নতুন করে অভিনন্দন জানাব। যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণে এখনো প্রস্তুতি সম্পন্ন করেনি, তারা যদি মনে করে তারা ভবিষ্যতে এ দেশ পরিচালনা করবে তাহলে সেখানে ভুল হবে। এর প্রমাণ আপনারা বিগত এক বছরে একাধিকবার দেখেছেন।

বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়ে যায়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যাচার স্বৈরাচারীরা বারবার পৃথিবীতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। আপনারা দেখেছেন ১৯৫২ সালে এ দেশের ছাত্ররা ভাষা আন্দোলনের জন্য জীবন দিয়েছিল, মাতৃ ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯৬২ সালে ছাত্ররা জীবন দিয়েছিল এদেশে শিক্ষার অধিকার আদায়ে জন্য। ৬৯ এর স্বৈরাচার বিরোধী পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সুসংগঠিত ছিল। সেই ছাত্র আন্দোলন পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছিল। দেশের প্রয়োজনে তরুণ ও ছাত্রসমাজ নিজের জীবনবাজি রেখে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং তারা জয়লাভও করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জয়লাভ করেছে ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনেও।

মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও বিএনপি নেতা সারোয়ার হোসেন মৃধা, পলাশ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস ছাত্তার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন ভুঁইয়া মিল্টন, নরসিংদী জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি শাহেন শাহ শানু ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মনির হোসেন মনির।