Image description

রংপুরে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একজন উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদককে জাতীয় নাগরিক পাটি-এনসিপির একটি ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক করার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ রাজনৈতিক মহলে।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, ১৮ আগস্ট রংপুর সদর উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী তওহীদ হোসেন সাদ্দাম ও ১ নং প্রথম যুগ্ম সসন্বয়কারী আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত ৪ নং সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়ন এনসিপির ১৫ সদস্যের সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করেন।

এতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় কৃষ্ণ রঞ্জণ বর্মন স্বাধীনকে। এই তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সবর্ত্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন স্বাধীন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের রংপুর সদর উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সদ্য পুষ্করনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছিল আওয়ামী লীগ। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়ে মনোনয়ন না পেয়ে ২০২৪ সালে সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

থানা সূত্র জানায়, গেলো বছর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবকে দমন করতে অস্ত্র এবং অর্থজোগান দেয়া ছাড়াও সরাসরি হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। রংপুর মহানগরীর তাজহাট ও কোতয়ালী থানায় ৫ আগস্টে পর করা হত্যা ও হত্যা চেস্টার তিনটি মামলার এজাহার নামীয় আসামি তিনি।

এছাড়াও তিনি গেলো বছর সরকার উপজেলা পরিষদ ভেঙ্গে দেয়ার পর পরই ইয়াবাসহ যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। মাদক ব্যবসা এবং সেবন সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে সদর কোতয়ালী থানায়।

রংপুর সদর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণ রঞ্জণ বর্মন স্বাধীনকে ইয়াবা কেনাবেচার সময় ইয়াবাসহ আটক করে যৌথ বাহিনী সদর থানায় সোপর্দ করে। তার নামে মাদক সেবন ও ব্যবসার মামলা আছে এই থানায়।

এসব তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। এনসিপির তীব্র সমালোচনা করে অনেকেই মন্তব্য করছেন। একজন তার মন্তব্যে লিখেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করা একটা নতুন দল এনসিপি যদি জুলাই বিপ্লবে হামলাকারী চিহ্নিত আওয়া মীলীগ নেতাকে তাদের দলে আশ্রয় দেয় টাকার বিনিময়ে তাহলে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের কি হবে। এই দলটির কি হবে।

আওয়ামী লীগ নেতা স্বাধীনকে এনসিপির নেতা করার বিষয়ে সদর উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী তওহিদ হোসেন সাদ্দাম বলেন, ‘২০২০ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর আর আওয়ামী লীগে যোগ দেন নি। তার বিরুদ্ধে করা মামলা গুলো চক্রান্তমূলক।’

এ ব্যাপারে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) ও রংপুর জেলা প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল্লাহ আল গালিব গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘কৃষ্ণ রঞ্জণ বর্মন স্বাধীনের বিরুদ্ধে জুলাই বিরোধীতার কোন প্রমাণ আমরা পাইনি। আগে আওয়ামী লীগ করতেন, এখন বহিষ্কৃত। এরপরও যদি তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান তিনি। খোঁজ নেয়া হচ্ছে বলে জানান।

এ ব্যাপারে কৃষ্ণ রঞ্জণ বর্মন স্বাধীনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায় নি।