Image description

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মেহেরপুর জেলার দুটি আসনে আগাম নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। গণসংযোগ, মিছিল, সমাবেশ বিভিন্নভাবে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চলছে। চায়ের দোকানে, পথে চলতে চলতে, ঘরে-বাইরে আলোচনায় কে মনোনয়ন পাবেন, তাঁর কর্মী বেশি—এসব নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলায় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

 
মেহেরপুরের দুটি আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে চান কমপক্ষে আটজন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দুটি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সব আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একটি আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে নির্বাচনে লড়াই করার জন্য প্রার্থী তৎপর রয়েছেন।
 
  মেহেরপুর-১ : মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটার তিন লাখ ১৩ হাজার ১৩৪ জন। বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন পেতে চান দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য আলমগীর খান সাতু। তাঁরা নিজেদের মতো করে গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণও করছেন।

গণসংযোগে ব্যস্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরাএই আসনে জামায়াতে ইসলামীর মেহেরপুর জেলা আমির তাজ উদ্দিন আহমেদকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই। তিনিও নিয়মিতভাবে গণসংযোগ, দলীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, ভোটারদের মন জয় করতে বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছেন। এখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের মেহেরপুর জেলা সভাপতি খাদেমুল ইসলাম।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুণ বলেন, ‘জনমতের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনা করে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আমার বিশ্বাস। দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রামে অনেক হামলা-মামলা মোকাবেলা করে রাজনীতি করে যাচ্ছি।

তার পরও দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে আমরা তাঁর হয়েই কাজ করব।’

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, ‘বিএনপি বড় দল। এখানে মনোনয়ন প্রতিযোগিতা থাকবেই। দলের অনেকেই মনোনয়ন চাইবেন। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর হয়েই নির্বাচনের মাঠে কাজ করব।’

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমির তাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই নিবার্চনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে, তারাও পরিবর্তন চাচ্ছে। এ কারণে এবারের নির্বাচন নিয়ে আমরাও আশাবাদী।’

মেহেরপুর-২ (গাংনী) : গাংনী উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে হালনাগাদ ভোটার দুই লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৯ জন। এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় আছেন সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সদস্য আমজাদ হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টন, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু। গ্রামে গ্রামে গণসংযোগ, প্রচারপত্র বিলি, ৩১ দফার লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাঁরা তৎপরতার প্রতিযোগিতায় আছেন।

এখানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নাজমুল হুদা। তিনিও পুরোদমে ভোট সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখানে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাকিল আহমেদের পক্ষে তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে এখানে প্রার্থী করা হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান সেন্টুকে। এ ছাড়া ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনিকে দলের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। দল যাঁকে জনগণের নেতা হিসেবে বিবেচনা করবে, তিনিই মনোনয়ন পাবেন। জেলা বিএনপির সদস্য সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন বলেন, বিএনপি অনেক বড় দল। এই দল থেকে অনেকেই প্রার্থিতা চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। আমিও মনোনয়নপ্রত্যাশী।