Image description

নতুন রাজনৈতিক দলের ১২১টি আবেদন নামঞ্জুর করে চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (২০ আগস্ট) ইসি উপসচিব মাহবুব আলম শাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্যের ঘাটতি পূরণ বা শর্ত প্রতিপালন করতে না পারায় ১৪৩টি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদনের মধ্যে ১২১টি আবেদন নামঞ্জুর করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। সব দলকে চিঠি দেওয়ার পর ইসির ওয়েবসাইটেও তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান মাহবুব আলম শাহ।

ইসি সূত্র জানায়, তথ্য ঘাটতি পূরণে ১৪৩টি দলকেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এনসিপিসহ ৮৪টি দল ঘাটতি পূরণ করে ইসিতে কাগজপত্র জমা দেয় চিঠি দেয়। ৫২টি দল ঘাটতি পূরণে সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে ৬২টি দল ঘাটতি তথ্য জমা দিলেও তা শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ৬টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও বিধি অনুযায়ী তার সুযোগ নাই। ১টি দল নির্ধারিত সময়ের পরে জমা দেয়। সব মিলিয়ে ১২১টি দলের নিবন্ধন আবেদন নামঞ্জুর করা হবে। আর জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ২২টি দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করছে ইসি।

গত ২০ এপ্রিল নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করে একটি নোটিশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরপর ৪৬টি দলের অনুরোধে সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে কোনো দলই উত্তীর্ণ না হলে ১৫ দিন সময় দিয়ে সব দলকে চিঠি দেয় ইসি।

আইন অনুযায়ী, প্রাথমিক যাচাই-বাছাই কমিশনের কোনো রাজনৈতিক দল যদি নিবন্ধন আবেদন সঠিকভাবে পূরণ না করে অথবা শর্তপূরণ বা দলিলাদির ঘাটতি থাকে তাহলে সেই দলগুলোকে ১৫ দিন সময় দিয়ে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সরবরাহসহ অন্যান্য ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ দিয়ে চিঠি দেয় কমিশন।

চিঠি পাওয়ার পর নিবন্ধন আবেদনকারী দল প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করলে কমিশন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন আবেদনকারী দল কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সেই দলকে নিবন্ধনের অযোগ্য বিবেচনা করে আবেদন বাতিল করে দেবে।

যে ২২ দলের আবেদন মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করছে ইসি—

১. ফরোয়ার্ড পার্টি: এই দলের মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী

২. আমজনতার দল: কর্নেল মিয়া মসিউজ্জামান এই দলের সভাপতি

৩. বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি): চেয়ারম্যান এমএম শাহাদাত

৪. বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি): মো. নুরুল হক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

৫. বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি: মহাসচিব মুহাম্মদ মুসা বিন ইযহার

৬. বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী): এই দলের সমন্বয়ক মাসুদ রানা

৭. মৌলিক বাংলা: সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ সাকী

৮. বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি: চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন

৯. জাতীয় জনতা পার্টি: অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবীর আকন এই দলের চেয়ারম্যান।

১০. জনতার দল: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. মো. শামীম কামাল চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।

১১. জনতা পার্টি বাংলাদেশ: ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন এবিএম ওয়ালিউর রহমান খান।

১২. বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি: আহবায়ক মোহাম্মদ রফিকুল আমিন

১৩. জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): মো. নাহিদ ইসলাম এই দলের আহ্বায়ক।

১৪. বাংলাদেশ জাতীয় লীগ: চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম

১৫. ভাসানী জনশক্তি পাটি: শেখ মো. রফিকুল ইসলাম এই দলের চেয়ারম্যান।

১৬. বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ: সভাপতি মো. আতিকুর রহমান (রাজা)

১৭. বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম): সভাপতি আব্দুস সামাদ সুজন

১৮. জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ): এই দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল

১৯. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি: মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম

২০. বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস): সভাপতি মো. হাসান

২১. বাংলাদেশ সলুশন পার্টি: শামছুল হক এই দলের সভাপতি

২২. নতুন বাংলাদেশ পার্টি: চেয়ারম্যান মেজর সিকদার, আনিসুর রহমান (অব.)।

আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয় জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোনো দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা পূর্বের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়ম কানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে এসব নিয়ম কানুনগুলোই সাধারণত খেয়াল করা হয়।