
সিলেট সিলেটের রাজনীতির ‘ সৌন্দর্য ’ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সৌহার্দ্য । চোরাচালান , বালু - পাথর লুটসহ নানা অপকর্মেও তাঁদের ‘ মিলমিশের ’ বিষয়টিও বেশ আলোচিত - সমালোচিত । বিখ্যাত পর্যটন স্পট সাদাপাথরের পাথর লুটের পর বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে । পাথর লুটপাটে বিএনপির অন্তত ২৮ নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে । নানাভাবে এখনো সম্পৃক্ত রয়েছেন আওয়ামী লীগের ৭ জন নেতা । সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে রয়েছে আটটি পাথর কোয়ারি । এর বাইরে সিলেটে আরও ৮-১০টি জায়গায় পাথর কোয়ারি রয়েছে । যেমন সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি ও উৎমাছড়া ।
পর্যটনকেন্দ্ৰ হিসেবে পরিচিত এসব জায়গায় পাথর আসে সীমান্তের ওপারে ভারতের পাহাড়ি নদী থেকে । আগে সংরক্ষিত এলাকা বাদে সিলেটের আটটি পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হলেও পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতির কারণে ২০২০ সালের পর আর তা করা হয়নি । তখন থেকে সিলেটের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা সব সময় পাথর উত্তোলনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন । বিগত পাঁচ বছরে তাঁরা নানাভাবে পাথর কোয়ারির ইজারা আবার চালুর চেষ্টা করেছেন ; কিন্তু সরকার অনুমতি দেয়নি । এরই মধ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় প্রকাশ্যে অবাধে শুরু হয় বালু-পাথর লুটপাট । সংরক্ষিত এলাকা, পর্যটনকেন্দ্র ও কোয়ারিগুলোর পাথর এবং বিভিন্ন মহালের বালু লুট ঠেকানোর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি ।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় সাবেক এমপি ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের মদদে অবৈধভাবে পাথর ও বালু লুট করা হতো । আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিলেটের প্রায় সব কটি কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতারা । অভিযোগ রয়েছে , তাঁদের মদদেই প্রকাশ্যে পাথর লুট শুরু হয় । পরিবেশকর্মী ও স্থানীয়দের অভিযোগ , ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর পুলিশি তৎপরতার ঘাটতির সুযোগে জেলার প্রতিটি কোয়ারিতে পাথর লুট শুরু হয় । এ সময় গোয়াইনঘাটের জাফলং , বিছনাকান্দি ; কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি , শাহ আরেফিন টিলা , সংরক্ষিত বাংকার (রেলওয়ের পুরোনো স্থাপনা) এলাকা , উৎমাছড়া ; জৈন্তাপুরের শ্রীপুর , সারী নদীর বাওন হাওর , আদর্শগ্রাম ঘাট , কানাইঘাটের লোভাছড়াসহ বিভিন্ন কোয়ারি - মহাল থেকে বালু- পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন শুরু হয় । এক বছর ধরে লুটপাটের কারণে এসব এলাকা এখন অনেকটাই পাথরহীন ।
পরিবেশবাদী সংগঠন ধরা সিলেটের সদস্যসচিব আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘পরিবর্তন দল ও ব্যক্তির হয়েছে , কিন্তু অপকর্ম করার ও অভিযুক্তকে অস্বীকার করার রাজনৈতিক সংস্কৃতির কোনো পরিবর্তন হয়নি । পাথরের টাকা উপজেলা থেকে জেলা হয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছায়- এমন আলোচনা বিভিন্ন মহলে ছিল । কিন্তু এসব অভিযোগ আওয়ামী লীগ সব সময় অস্বীকার করত । ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে । আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীদের বদলে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নাম এখন আলোচিত পাথর লুন্ঠনে । বিএনপিও তাদের নেতা - কর্মীদের লুটপাটের অভিযোগ কৌশলে অস্বীকার করে । মাঝেমধ্যে দু- একজন আলোচিত লুটপাটকারীকে বহিষ্কার করা হলেও বহিষ্কারের কারণ প্রকাশ্যে স্বীকার করা হয় না । ” অন্য সব জায়গায় পাথর বেশির ভাগ লুট করার পর নজর পড়ে পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর এলাকায় ।
গত এপ্রিলের শেষের দিকে সেখানে লুটপাট শুরু হলেও গত এক মাসে বেশি লুটপাট হয়েছে । স্থানীয় বাসিন্দা , শ্রমিক , ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে পাথর লুটে জড়িত নেতাদের নামও জানা গেছে । তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আত্মগোপনে চলে গেছেন ।
কোম্পানীগঞ্জে দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সাদাপাথরে পাথর লুটপাটে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পরোক্ষ মদদ ছাড়াও চাঁদাবাজি , দখলবাজির অভিযোগ আছে । এ ছাড়া তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজন সরাসরি লুটপাটে জড়িত । এ ঘটনায় ১১ আগস্ট রাতে তাঁর দলীয় সব পদ স্থগিত করে বিএনপি । বিএনপি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিলেও স্থানীয় প্রশাসন সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে গতকাল রোববার পর্যন্ত আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি ।
অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের আগের একটি মামলায় গত বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয় উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ( ইউপি ) চেয়ারম্যান মো . আলমগীর আলমকে । তিনি জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়কও । সাদাপাথর-সংলগ্ন সংরক্ষিত বাংকার এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু - পাথর তোলার অভিযোগে গত ১৪ জুলাই ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদ থেকে উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো . দুলাল মিয়া ওরফে দুলাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার , পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ।
লুটপাটের সঙ্গে জড়িত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়া ও তাঁর ভাই আজিজ ; সাহাব উদ্দিনের বোনের জামাই ও যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন ; তাঁর ভাই সাজন মিয়া ; ছাত্রদলের কর্মী জাকির হোসেন ; সাহাব উদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মোজাফর আলী ; উপজেলা যুবদলের সদস্য মানিক মিয়া ; জেলা যুবদলের সহসম্পাদক বাহার আহমেদ রুহেল ; তাঁর ভাই গিয়াস উদ্দিন , নাজিম উদ্দিন ; সহসাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আহমেদ মুসতাকিনসহ বিএনপির ১৫-২০ জনের নাম এসেছে । এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কর্মী পূর্ব ইসলামপুর ইউপির সদস্য কাজল সিংহ , আওয়ামী লীগ কর্মী মনির মিয়া ( অন্য মামলায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার ) , হাবিল মিয়া ও সাইদুর রহমান সাদাপাথর এলাকায় লুটপাটে জড়িত ।
এদিকে , কোম্পানীগঞ্জের দক্ষিণ ধলাই বালুমহাল ইজারা নিয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা এবং ধলাই সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে ইজারাদার মো . আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে । গত মঙ্গলবারও সেতুর পাশে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা । তাঁরা অভিযোগ করেন , ইজারাবহির্ভূত স্থান থেকে নির্বিচার বালু উত্তোলন করায় সেতুর ক্ষতি হচ্ছে । স্থানীয়দের অভিযোগ , তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু এবং সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদের ‘ পরোক্ষ মদদে ’ ইজারাদার মো . আবদুল্লাহর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন ।
যুবদল নেতা মকসুদ আহমদ বলেন, ‘এগুলো অপপ্রচার । একটি দুষ্ট চক্র আমাকে রাজনৈতিক , সামাজিক ও পারিবারিকভাবে ঘায়েল করতে এসব প্রচার করছে । বালু - পাথর লুটপাটের সঙ্গে আমার কখনো কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না , এখনো নেই । ’ গোয়াইনঘাটে লুটপাটে বিএনপির ৩৫ জন বর্তমানে গোয়াইনঘাট উপজেলার বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে পাথর লুটপাটে মদদদাতাদের অন্যতম জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ( পদ স্থগিত ) রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরা , গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত কোষাধ্যক্ষ মো . শাহ আলম ওরফে স্বপন, জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম ( লুটপাটের অভিযোগে গত ৯ জুন বহিষ্কৃত ), পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত ৩৫ জন নেতা - কর্মী জড়িত । জাফলং থেকে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বালু ও পাথর তোলায় বিএনপির ৩১ জন নেতা - কর্মীর বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর গত ২৫ মার্চ একটি মামলাও করেছে । দুই দলকে খুশি করে আওয়ামী লীগ নেতার লুটপাট কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের নেতারা নিয়ন্ত্রণ করছেন ।
জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং সর্বশেষ উপজেলা চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ , উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক এবং ১ নম্বর লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো . তমিজ উদ্দিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনো নিয়ন্ত্রণ করছেন । ৪- ৫ একর জায়গা ইজারা নিয়ে ৪-৫ কিলোমিটার জায়গা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছেন । আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পলাশ আত্মগোপনে চলে গেলেও তমিজ চেয়ারম্যান সব চালাচ্ছেন । তাঁরা উপজেলা বিএনপির তিন পক্ষ ও জামায়াত নেতাদের খুশি করে নিজেদের সাম্রাজ্য রক্ষা করছেন । অভিযোগ অস্বীকার করে মো . তমিজ উদ্দিন বলেন , “ এটা মিথ্যা । আমার বিরুদ্ধে এমনি মানুষজন নানা অভিযোগ করে ; যা ভুয়া । আমি এসবে জড়িত না । আমার স্টক করা মাল মাসখানেক আগে বিক্রি করে শেষ করেছি ।
জৈন্তাপুরে আ.লীগ-বিএনপি মিলেমিশে লুট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জৈন্তাপুরে দলের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এবং সর্বশেষ উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী , সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজার নেতৃত্বে এসব বালু - পাথর লুটপাট নিয়ন্ত্রণ হতো । গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতন হলে আব্দুর রাজ্জাক রাজার বোনজামাই উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল আহাদ , যুবদল নেতা দিলদার হোসেন , সালেহ আহমদ ও আওয়ামী লীগ নেতা রহিম উদ্দিন , তাঁর ভাই তাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে চলছে বালু - পাথর লুটপাট ।
অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল আহাদ বলেন, ‘গত ২ জুন আমি শ্রীপুর পাথর কোয়ারি সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি । দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে অবৈধভাবে পাথর - বালু ব্যবসা আমি করছি না । ' সিলেট বিএনপির সূত্রে জানা যায় , সাদাপাথরসহ কোম্পানীগঞ্জে অবৈধভাবে বালু - পাথর উত্তোলনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা- কর্মীদের নাম আসার বিষয়টি তদন্ত করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় সিলেটে এসেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবাবিষয়ক সহসম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া ( জুয়েল ) । তিনি গত মঙ্গলবার সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন । তিনি কেন্দ্রে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন ।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী বলেন , “ আমরা প্রশাসনকে সরাসরি বলে দিয়েছি , যারা লুটপাটে জড়িত , তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য । আমরা বিএনপির কাউকে জড়িত পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি । এ পর্যন্ত বিএনপির দুজনের পদ স্থগিত এবং সহযোগী সংগঠনের দুজনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । ” বৈধভাবে পাথর তোলার পক্ষে জামায়াত , এনসিপি সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন বলেন , ‘ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব যাঁদের , তাঁরা কি সঠিকভাবে সেটি করেছেন ? প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে এমনটি হয়েছে । সরকারি নীতিমালা মেনে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি আমাদের আগেও ছিল , এখনো আছে । ' এনসিপি সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন শাহান বলেন , ‘ আমাদের অঞ্চলের শ্রমিকেরা বেকার হওয়ায় পাথর কোয়ারি সংশ্লিষ্ট কিছু সংগঠন মানববন্ধনে সব দলকে দাওয়াত দেয় । সেখানে আমরা বলেছি , পরিবেশ রক্ষা করে বৈধ প্রক্রিয়ায় পাথর উত্তোলন দরকার । লুটপাট , চাঁদাবাজির পক্ষে আমরা নই ।
ব্যর্থতা মানতে নারাজ কর্তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের ব্যর্থতা মানতে নারাজ কর্তাব্যক্তিরা । সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন , ‘ এখন অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন । আমরা নিষ্ক্রিয় না সক্রিয় ছিলাম , কী কী করেছি , সকল তথ্য আমাদের কাছে আছে । আপনারা চাইলে আমি সব দিয়ে দেব । ” জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন , “ আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না । নিয়মিত অভিযান , ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি । কখনো বন্ধ ছিল না । মনে হচ্ছে , আমরা যে কার্যক্রম নিয়েছিলাম , সেটা পর্যাপ্ত ছিল না । ফলে হয়তো এমনটা হয়েছে । এখন আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা নিয়েছি । সেই কারণে এখন বন্ধ হয়ে যাবে । প্রয়োজন হলে আমরা আরও বড় আকারে ব্যবস্থাপনা করব । ’
পরিবেশের ১২ মামলা , গ্রেপ্তার ১ পরিবেশ অধিদপ্তরের দাবি , গত বছরের ৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত অবৈধভাবে বালু - পাথর উত্তোলনের অভিযোগে তারা ১২ টি মামলা করেছে । এসব মামলার আসামি ১৯১ জন । একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । পুলিশের ১৯ টি মামলায় ৬০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে । টাস্কফোর্সের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫২ জন । আর বিএমডির এক মামলায় আসামি দেড় হাজার থেকে ২ হাজার । ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।
সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন ) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন , ‘ দুর্বৃত্তদের হাত লম্বা নয় । দেশে একটা অরাজক অবস্থা চলছে । অরাজক আর রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে আমাদের মুক্তি পাওয়া দরকার । প্রশাসন সব সময় দুর্বৃত্তায়নের পক্ষে থাকে । যে কারণে তারা ব্যবস্থা নেয় না । ” বাড়তি সময় চাইল তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসন সাদাপাথরে লুটপাটের ঘটনা তদন্তে গত মঙ্গলবার তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে । কমিটির গতকাল রোববার প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল । কিন্তু গতকাল প্রতিবেদন না দিয়ে আরো তিন দিন সময় চেয়েছে তদন্ত কমিটি । তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ) পদ্মাসেন সিংহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন , ‘ তদন্ত এখনো শেষ হয়নি । বিস্তারিত যাচাইয়ের স্বার্থে আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন । তাই জেলা প্রশাসকের কাছে তিন দিনের সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে ।