
ঐক্যবদ্ধ মুসলিম উম্মাহ গঠনের মাধ্যমে ইসলামের বিশ্বায়নের জন্য নতুন করে ইতিহাস গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লব করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেছেন, ইতিহাস লেখকরা হিন্দু নয়তো ব্রিটিশ। অন্যতম একজন ইতিহাস লেখক আরসি মজুমদারের লেখা মুসলিমবিরোধী। এই ইতিহাস পুনর্লিখন না হলে, প্রকৃত ইতিহাস রচনা না করতে পারলে পরবর্তী প্রজন্ম মুসলমানদের সম্পর্কে জানতে পারবে না।
শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে গার্ডিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইসলামিক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘গ্লোবালাইজেশন অব ইসলাম উইথ দ্য ভিশন অব এ ইউনাইটেড উম্মাহ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন গার্ডিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খালিদ সাইফুল্লাহ বক্সী। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন, দেশবরেণ্য মুফাসসির ড. মিজানুর রহমান আজহারী।
কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মূখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ড. খলিলুর রহমান মাদানী, একুশে টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, ইসলামিক টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্নেল (অব.) ফরিদুল আকবর, বিশিষ্ট মুফাসসির শায়খ জামালুদ্দীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ড অব ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. গিয়াস উদ্দিন তালুকদার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন—গার্ডিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খালিদ সাইফুল্লাহ বকসী।
মাহমুদুর রহমান বলেন—কোরআন হাদিসের সঙ্গে ইসলামের ইতিহাস পড়তে হবে। তা নাহলে গ্লোবালাইজেশনের ভূ-রাজনীতি বুঝতে পারব না।
মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বে প্রতি চারজনে একজন মুসলমান থাকা সত্ত্বেও তারা নির্যাতিত হচ্ছে, শাসিত হচ্ছে। কারণ মুসলমানদের ঐক্য নেই। গাজায় গণহত্যা হলেও মুসলমানরা কিছুই করতে পারছে না।
আমার দেশ সম্পাদক বলেন—মুসলমানদের এই বিভক্তি নতুন নয়, পুরোনো ইতিহাস। একসময় পৃথিবীর অর্ধেকটা শাসন করত মুসলমানরা। কিন্তু দ্বন্দ্ব ও বিভক্তির কারণে তা হাতছাড়া হয়েছে। প্রকৃত অর্থে ইসলামকে গ্লোবালাইজেশন করতে চাইলে ইসলামোফোবিয়া বুঝতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ড. মিজানুর রহমান আজহারী রাসুল (সা.) এর ১২টি মানসিকতার ওপর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাসুলের অন্যতম একটি মানসিকতা ছিল সংস্কার। বর্তমানে বাংলাদেশে যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে তা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, রাসুলের মদিনা চার্টার ছিলো একটি ইনক্লুসিভ চার্টার। বর্তমান সংস্কার কমিটি এটাকে কাজে লাগাতে পারে। নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন—দীর্ঘ সময় আমাদের সমাজব্যবস্থায় ইসলামোফোবিয়া করে রাখা হয়েছে। ইসলামভীতি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সুপরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে। তাই রাষ্ট্র, সমাজ ও সংস্কৃতিতে ইসলামভীতি দূর করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের দেশে ইসলামোফোবিয়ার আর স্থান হবে না।
তিনি বলেন—হাসিনার ফ্যাসিবাদী সময়ে জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছিল। এটাও থাকবে না। একইসঙ্গে উগ্রবাদীকেও স্থান দেয়া হবে না। সংখ্যালঘুরা যাতে এখানে নিরাপদবোধ করে সেই উদ্যোগ নিতে হবে।