
শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানানো সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিদেরকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তাদের ছবিতে প্রতীকী জুতা নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীরা এ আখ্যা দেন।
বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচির একটি ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বয়কট করুন’; ‘শহীদের রক্তকে তাচ্ছিল্য করে গণহত্যার পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করে এদের চিনে রাখুন’ লেখা রয়েছে।
কর্মসূচিতে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, গতকালকে আমরা দেখেছি তথাকথিত তারকারা আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার জন্য শোকের নামে মুজিব বন্দনায় নেমেছিল। এরাই ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট টু শুব্দও করেনি, কারণ ৫ আগস্ট বাকশালী মুজিবের কন্যা খুনি হাসিনা পালিয়েছিল। ওই দিনই আওয়ামী লীগের নিশানা শেষ হয়ে যায়। এখন সেই আওয়ামী লীগকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন করে মুজিবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। হাসিনার আমলে মুজিবকে দিয়েই আওয়ামী লীগ পুনরায় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। ভালো মুজিব বলতে কিছু নাই, তাকে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী হত্যা না করলে আজকের এই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়া যেত না।
তিনি আরও বলেন, কালচারাল ফ্যাসিস্টরা সংঘবদ্ধ হয়ে লীগের টাকা খেয়ে গতকাল প্রচারণায় নেমেছে। সরকার গত এক বছরে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা গতকাল শোক প্রকাশ করার সাহস করেছে। তাছাড়া জুলাই ঘোষণাপত্রে ১৫ আগস্ট বিপ্লবকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, অথচ ৭ নভেম্বরকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
১৫ আগস্ট না হলে ৭ নভেম্বর কীভাবে আসত? এই বিপ্লবকে স্বীকৃতি না দিলে এভাবে মুজিববাদকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। তাই আমরা ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আজ জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি করেছি কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে। আমি সাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আইন করার দাবি জানাই; যাতে কোনো ফ্যাসিস্টের জন্য আর কেউ মায়াকান্না করতে না পারে।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্যসচিব জিহাদী ইহসান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর আমরা দেখতে পেলাম আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করতে একদল সংস্কৃতি অঙ্গনের লোকেরা উঠেপড়ে লেগেছে। বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচার, বাকশালের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবকে আরাধনা করছে। শেখ মুজিবকে নরমালাইজ করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে এরা পুনর্বাসন করতে চাইছে। ইন্ডিয়া হাইকমিশনার বাকশালের পিতা শেখ মুজিবকে জনমানুষের মাঝে কালচারাল ফ্যাসিস্টদের দিয়ে গণহত্যার পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করছে। এরা মূলত ২০০৮ সালের ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে বাংলাদেশকে দিল্লির সঙ্গে গোলামির পথ তৈরি করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই- একাত্তরের কথা বলে জুলাইয়ের রক্তকে তাচ্ছিল্য করতে আমরা দেব না। একাত্তরের অবদানের সঙ্গে মুজিবের সন্ত্রাসী কায়দায় ক্ষমতায় থেকে মানুষকে জুলুম করাকেও আমরা বলতে চাই। জুলাইয়ের পর অবাধ বাকস্বাধীনতা পাওয়ার অর্থ এই নয় যে, গণহত্যাকারীর পক্ষে অবস্থান নেবেন। বাকস্বাধীনতার অর্থ মজলুমের পক্ষে থাকা জালিমের বিরুদ্ধে থাকা। আমরা তাদের বলতে চাই- এ দেশের মানুষের রক্তকে তাচ্ছিল্য করে, দিল্লির কালচারাল আধিপত্যবাদকে নরমালাইজ করে আবার গুম খুন গণহত্যা দুর্নীতির শাসন কায়েম করার খায়েশ আমরা পূরণ হতে দেব না। এ দেশের মানুষের পক্ষে থাকুন, জনআকাঙ্ক্ষা ও রক্তের হিস্যার পক্ষে থাকুন- এটাই আপনাদের জন্য সতর্কবার্তা।