
কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে চারটি আসন গঠিত। সীমান্তবেষ্টিত এ অঞ্চল রাজনৈতিকভাবে জাতীয় পার্টির দ্বিতীয় আঁতুড়ঘর ও অজেয় দুর্গ হিসেবে পরিচিত। প্রায় চার দশক ধরে এখানে একক আধিপত্য ধরে রেখেছে দলটি। মাঝে দুটিতে দুইবার আওয়ামী লীগ ও একটিতে একবার বিএনপি নেতা জয় পেয়েছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে আওয়ামী লীগের মতো জেলায় দলটির দোসর জাপাও নেতৃত্ব শূন্য। মাঠে বিএনপির তৎপরতা থাকলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল নির্বাচনি ময়দান সাজাতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে ১ ও ৩ নম্বর আসনে দলটিতে বিভাজন স্পষ্ট। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থিরা সুসংগঠিত ও পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী)
১৯৮৬ সালে তৈরি এ আসনে জাতীয় পার্টির তিন দশকের রাজত্ব আছে। দলটির দুর্গ হিসেবে পরিচিত আসনটিতে দলটি সাতবার জয় লাভ করে। বিএনপি ১৯৯৬ সালে আর আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালে রাতের ভোটখ্যাত নির্বাচনে একবার জয়ী হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ আসনে জমে উঠেছে ভোটের পরিবেশ। একদিকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মধ্যে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী এক হালি। অন্যদিকে একক প্রার্থী নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। স্থানীয়ভাবে সংগঠনগত প্রস্তুতিতে ঘাটতি সত্ত্বেও তরুণ ভোটারদের মধ্যে কোটা আন্দোলনের অন্যতম নেতা গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লাও অন্যতম ফ্যাক্টর। সব মিলিয়ে ভোটের হিসাবনিকাশে এবার নতুন এক সমীকরণ যোগ হচ্ছে। এছাড়া আসনটির মোট ভোটার পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার সংখ্যায় বেশি। ইসলামী দলের প্রতি দুর্বলতা, বিশেষ করে নারী ভোটারদের মতামত এবারের নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
এদিকে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে এ আসনে ততই বিএনপির মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির দুই গ্রুপ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে। তৃণমূলে ঐক্যহীনতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে দলটি। দলীয় ও জাতীয় দিবসে আলাদা গণসংযোগ করছেন এ দলের নেতাকর্মীরা। একদিকে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার অনুসারীরা, অন্যদিকে তার বিরোধীপক্ষ।
রানা ১৯৯৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। তবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণসহ বিভিন্ন সেবামূলক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে সক্রিয় ছিলেন দলের আরেক নেতা জেলা বিএনপির সদস্য ডা. ইউনুছ আলী। এবারের লড়াইয়ে তার মনোনয়ন পাওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে। পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজা এবং উদীয়মান তরুণ নেতা ডা. মাহফুজুর রহমান মারুফও মনোনয়নের দৌড়ে আছেন।
অন্যদিকে অনেকটা গোছানো প্রচারণায় নেমেছেন জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের কারমাইকেল কলেজ রংপুর শাখার সাবেক সভাপতি ও রংপুর মহানগর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি, বর্তমানে রংপুর মডেল কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।
ইসলামী আন্দোলনের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন জেলা শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক হারিসুল বারী রনি। রাজনীতিতে নতুন হলেও ইসলামি মূল্যবোধের কথা তুলে ধরে তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করছেন তিনি।
গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা বিন ইয়ামিন মোল্লা মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম-২ (রাজারহাট, ফুলবাড়ী ও সদর)
আসনটি জেলা রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৮৪ সালে বৃহত্তর রংপুর-১৪ নির্বাচনি এলাকা থেকে আলাদা করে এ আসন তৈরি করা হয়। সৃষ্টির পর থেকে এটি জাপার দুর্গ হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এখানে দলটির একক আধিপত্য আছে। ২০০৯ সালের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের জাফর আলী ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হামিদুল হক খন্দকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন।
বর্তমানে এটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়েছে তরুণ তুর্কীদের নিয়ে গড়া চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবিদার নতুন দলটি। অন্যদিকে ধানের শীষের কান্ডারী হওয়ার জন্য সরব আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা। মাঠের লড়াইয়ে এককভাবে প্রস্তুতিতে তৎপর জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী।
এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেনÑদলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবু ও হাসিবুর রহমান হাসিব। এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ দলটির একক প্রার্থী। জামায়াতের জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলী সরকার ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা শাখার সভাপতি নূর বখত মিয়া।
জুলাই বিপ্লবপরবর্তী সময় থেকে জেলায় দলীয় নানা কর্মসূচিতে রুহুল কবির রিজভীকে একাধিকবার দেখা গেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন তিনি। তবে বিএনপি-জোট পরে সমঝোতার ভিত্তিতে গণফোরামের প্রার্থী দেয়। আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনে এবারও আলোচনায় আসছে তার নাম। দলের অনেক নেতাকর্মী তাকে ছাড়াই তার পক্ষে প্রচারে মাঠে নেমেছেন।
কায়কোবাদ বলেন, ‘আমি গণসংযোগ করছি, করব, তবে ভাইয়ের (রিজভী) ওপর কথা নাই। আমরা ও জনগণ চায় ভাই এ আসনে প্রার্থী হোক। দল আমাকে এর আগেও মনোনয়ন দিয়েছিল। এবার সে লক্ষ্যে মাঠে আছি।’
এনসিপির কান্ডারী হিসেবে মাঠে সরব ড. আতিক মুজাহিদ। তিনি বলেন, ‘কুড়িগ্রাম অত্যন্ত অবহেলিত জনপদ। বন্যা, নদীভাঙন, বেকারত্ব ও ভঙ্গুর চিকিৎসাব্যবস্থা এ জেলার নিত্যসঙ্গী। ফ্যাসিস্টকে তাড়াতে পেরেছি, এ বৈষম্যও ভাঙতে পারবÑইনশাআল্লাহ।’
কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর)
একক উপজেলা উলিপুর নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম- ৩ আসন। ১৯৮৪ সালে সৃষ্ট আসনটি জাপার দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এরশাদপন্থি রাজনীতির বিভিন্ন অধ্যায় অতিক্রম করে জাপা ১৯৯৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ আসনে বারবার জয় লাভ করে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা জয়ী হন। এবার পুরোনো সমীকরণ ভেঙে নতুন শক্তির উত্থান ঘটছে। উত্তরাঞ্চলের নদীবিধৌত জনপদের আসনটিতে পাল্টে যাচ্ছে রাজনীতির দৃশ্যপট। বহু বছর ধরে মাঠের রাজনীতি থেকে দূরে থাকা জামায়াত দলটির হেভিওয়েট নেতাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ভোটযুদ্ধে জামায়াত একক প্রার্থী দিয়ে সক্রিয় দল হিসেবে জনগণের নজরে এসেছে। তবে এ আসনে বিএনপির জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে। সম্প্রতি দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক নেতা তৎপর থাকায় অন্তর্দ্বন্দ্বে জনমনে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদের মতো বিকল্প রাজনৈতিক শক্তিও আসনটিতে ঘাঁটি গাড়তে চায়।
জামায়াতের প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি। তাকে নিয়ে আশার আলো দেখছেন দলটির এ আসনের নেতাকর্মীরাা। সালেহী বলেন, ‘গণসংযোগের মধ্য দিয়ে ইসলামি আদর্শের রাজনীতির আদর্শিক ঘরানা ধরে রেখেই ভোটারদের কাছে নতুন আস্থার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা আশাবাদী।’
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে আছেন দলটির সাবেক জেলা সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাসভীর উল ইসলাম এবং বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক। দুজনই মাঠে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি মনোনয়ন দৌড়ে কেন্দ্রে জোর লবিং চালাচ্ছেন। তাসভীর বলেন, ‘বৃহৎ দল হিসেবে প্রতি আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকার বিষয়টি গৌরবের। দল যাকেই টিকিট দেবে তার হয়েই ভোটের মাঠে একত্রে কাজ করব।’
আবদুল খালেক বলেন, ‘দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সংগঠন পরিচালনায় দক্ষতা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা বিবেচনায় দল এবার প্রার্থী দেবে। বিএনপির হয়ে মাঠে ছিলাম, আছি, দল যাকে মনোনয়ন দিক তার পক্ষেই মাঠে থাকব।’
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও দলটির প্রার্থী অ্যাডভোকেট এসএম নুরে এরশাদ সিদ্দিকী এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ডা. আক্কাস আলী সরকার। দল দুটির স্থানীয় সাংগঠনিক ভিত্তি অপেক্ষাকৃত দুর্বল। গণসংযোগে এ দুই প্রার্থীও নিজ নিজ আদর্শিক অবস্থানে থেকে অংশ নিচ্ছেন মাঠের লড়াইয়ে।
এনসিপি একেবারেই নতুন শক্তি হলেও তরুণদের মধ্যে বেশ কৌতূহল তৈরি করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থী লেখক ও ছাত্রনেতা নাজমুল আল হাসান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় এবং শহরাঞ্চলে শিক্ষিত ভোটারদের মধ্যে আলোচনায় আছেন।
কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী)
তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-৪ আসন। এখানে বেশ কয়েকজন নেতা গণসংযোগ চালাচ্ছেন। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কেউ কেউ দলের একক প্রার্থী হিসেবে, কেউ দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীক ছাড়াই শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। চব্বিশের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে মনোননয়ন প্রত্যাশীরা ভোট ও দোয়া চেয়ে ব্যানার ফেস্টুনে প্রচার করে চলেছেন। ঈদ-পূজাসহ অন্যান্য জাতীয় দিবস সামনে এলেই শরিক হচ্ছেন সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে। ভোটের মাঠ গোছাতে নেমে পড়েছেন তারা। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি ওয়ার্ড ভিত্তিক জনমত গঠন ও সমর্থন বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা কৌশলে কাজ করছেন বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের একক প্রার্থীরা। তবে এখন পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের।
বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন পাঁচজন। তারা হলেনÑসাবেক সংসদ সদস্য ও চিলমারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারী সরকার, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও রৌমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান, রাজিবপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান, মহিলা দলের নির্বাহী কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও রৌমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মমতাজ হোসেন লিপি এবং জেলা যুবদল সভাপতি রায়হান কবির।
জামায়াতের রৌমারী উপজেলার সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক ও ইসলামী আন্দোলনের রৌমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান একক প্রার্থী হয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
গত ৩৮ বছরে এ আসনে চারবার জাতীয় পার্টি, তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি (জেপি), বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে একবার করে এমপি নির্বাচিত হন।
এর মধ্যে ২০১৪ সালের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনে জেপি থেকে রুহুল আমিন, এরপর ২০১৮ সালে রাতের ভোটখ্যাত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন সর্বশেষ ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপ্লব হাসান পলাশ এমপি নির্বাচিত হন।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের শোষণামল তুলে ধরে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আজিজুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ১৫টি বছর মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। জুলাই বিপ্লবের পর আবার ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বপ্ন দেখছে জনগণ। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রচারে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’
এদিকে বাবার ভোট ব্যাংককে কাজে লাগাতে চান বিএনপি নেতা মমতাজ হোসেন লিপি। তার বাবা প্রয়াত গোলাম হোসেন জাতীয়পার্টি (এরশাদ) থেকে দুইবার মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। লিপি বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে বিএনপির গণজোয়ার বইছে। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এ জোয়ার দ্বিগুণ হবে।’
এদিকে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মোখলেছুর রহমান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাকে দল সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে মনোনয়ন দিলে দেশ নায়ককে আসনটি উপহার দিতে পারব।’
নদী ভাঙন, বেকারত্ব ও অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা এ আসনের মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ করে জামায়াত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অবহেলিত এই জনপদের মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ত্রয়োদশ নির্বাচনে জনগণের দোয়ায় ও ভোটারদের সমর্থনে এ সুযোগ কাজে লাগাবÑ ইনশাআল্লাহ।’
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘একটি দলের কারণে দেশে চাঁদাবাজি, খুন-খারাবি, অন্যায়-অবিচার বাড়ছে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার জরুরি। এটা না হলে নির্বাচন দিয়ে কোনো লাভ নেই।’