
তারিক সিদ্দিকের উত্থান হয়েছিল সশস্ত্র বাহিনীতে শেখ হাসিনার ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য। সেজন্যই নিজের আত্মীয়কে সামরিক উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন। অঘোষিতভাবে তিনি সশস্ত্রবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু আস্তে আস্তে তারিক সিদ্দিক হয়ে ওঠেন ‘মিস্টার টোয়েন্টি পার্সেন্ট’। শুধু সশস্ত্রবাহিনীর কেনাকাটা নয়, সব কেনাকাটাতেই তারিক সিদ্দিক হয়ে ওঠেন গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু তারিক সিদ্দিক আওয়ামী লীগের মাফিয়া অংশের প্রধান হয়ে উঠেছিলেন, গুম, খুনের মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমন করা, বিরোধী মতকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া, পৈশাচিক কায়দায় আয়নাঘরে নিয়ে গিয়ে বিরোধী পক্ষকে নির্যাতনের মাধ্যমে তিনি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এবং বিশ্বস্ত হয়ে উঠেছিলেন। আর এ বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে তিনি দুর্নীতির জাল বিস্তার করেছিলেন সর্বব্যাপী।
তারিক সিদ্দিকের দুর্নীতি অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, প্রথম দিকে তিনি দুর্নীতি করতেন সশস্ত্রবাহিনীর কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে। সশস্ত্রবাহিনীর বিভিন্ন কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করতেন। কোথায় থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ, সাঁজোয়া যান ইত্যাদি কিনতে হবে, তা তিনি নির্ধারণ করে দিতেন। এসব কেনাকাটা যেন নির্বিঘ্নে, প্রশ্নহীনভাবে হয় সেজন্য তিনি তার পছন্দের ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বসাতেন, যেন তারা তাকে সহযোগিতা করে। আর আস্তে আস্তে তিনি তার দুর্নীতির ব্যাপ্তি বাড়াতে শুরু করেন। দুর্নীতির ব্যাপ্তি বাড়িয়ে তিনি বিভিন্ন বড় ধরনের কেনাকাটার মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সংখ্যা ও মান বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ছিল তারিক সিদ্দিকের একটি ‘ব্রেন চাইল্ড’। তারিক সিদ্দিক এ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন। অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির মাধ্যমে তারিক সিদ্দিক প্রায় ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এনিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তারিক সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলা করে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন এ বছরের ৭ জানুয়ারি ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ এসব মামলা দায়ের করেছে।
একটি মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইনস্টলেশন অব রাডার উইথ সিএনএস-এটিএম প্রকল্পের রাডার নির্মাণকাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়। এ প্রকল্পে থ্যালেস এলএএস ফ্রান্স এসএএস নামে একটি কোম্পানির রাডার বসানোর কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তারিক সিদ্দিকের ক্ষমতার প্রভাবে সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকারকে প্রভাবিত করে জিটুজি ভিত্তিতে ফ্রান্সের কোম্পানি থালেস এলএএস-এর সঙ্গে চুক্তি করে কার্যাদেশ প্রদান করেন। এ কোম্পানির সঙ্গে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ প্রকল্পের কাজে ৭৩০ কোটি টাকা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, থালেস নামের কোম্পানিটি মূলত রাডার নির্মাণের কাজ করে থাকে। এ কোম্পানিটি কোনো সিভিল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে না। প্রকল্পটিতে কন্ট্রোল টাওয়ার বিল্ডিং নির্মাণের কাজে কোনো সুনির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন না থাকা সত্ত্বেও এ কাজে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরার তথ্য পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কৌশলে পিপিআর-২০০৮-সহ ক্রয় প্রক্রিয়ার বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের বদলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন জিটুজি দরপত্র প্রক্রিয়ায় কার্যাদেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার হীন উদ্দেশ্যে ইলেকট্রিক অ্যান্ড মেকানিক্যাল কাজের সঙ্গে সিভিল কাজ একীভূত করে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়।
অপর একটি মামলাতেও তারিক সিদ্দিকসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। সে এজাহারে বলা হয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (থার্ড টার্মিনাল) প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয় অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে। ওই কাজের সঙ্গেও অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সম্পৃক্ত বলে তথ্য পাওয়া যায়। বিধি লঙ্ঘন করে ওই প্রকল্পের ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রকল্পের অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে ২১ হাজার কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ প্রকল্প থেকে ২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়।
অপরদিকে, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজে স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে বেআইনি সুবিধা নিয়ে ও দিয়ে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাকটর হয়ে কার্যাদেশ পেয়ে তা বাস্তবায়নে নিয়োজিত থাকে। অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড দেশের বিমানবন্দরগুলোর কোনো প্রকল্পে সরাসরি, আবার কোনো প্রকল্পে বিদেশি কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হয়ে কাজ করেছে। আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে পরস্পর যোগসাজশে প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক কাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়। প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজে ২১২ কোটি টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ ও রানওয়ে নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) নামে একটি চীনা কোম্পানিকে প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আসামিরা পরস্পর সহযোগিতা করেন।
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) থাকা নাগরিকের তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে তারিক সিদ্দিক একাই হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এই তথ্যভান্ডারের নিয়ন্ত্রক টাইগার আইটি হলেও প্রতিষ্ঠানটির নেপথ্যের দুর্নীতিবাজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিক।
ইসির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৫ বছর এদের কারণে অরক্ষিত অবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি নাগরিকের এনআইডি ডাটাবেজ।
‘টাইগার আইটি’র কর্ণধার জিয়াউল আহসান। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই জিয়াউলের সঙ্গে তারিক সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তথ্যভান্ডারকে কাজে লাগিয়ে ঘুষ হিসেবে তারিক সিদ্দিক কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিশ্বব্যাংকের তদন্তে উঠে এসেছে। স্মার্টকার্ড প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বিশ্বব্যাংক ২০১৯ সালে তারিক সিদ্দিকের নিয়ন্ত্রণাধীন টাইগার আইটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে। ব্যাপক অভিযোগের পরও শেখ পরিবারের সঙ্গে সখ্য থাকায় টাইগার আইটি সবসময় ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, এনআইডির তথ্য যাচাইকারী সেবা প্রতিষ্ঠান ‘পরিচয় ডটকম’ এবং টাইগার আইটির সঙ্গে তারিক সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এ কারণে সফটওয়্যার উন্নয়নে কোনো কাজ করেনি তারা। ফলে কয়েক কোটি নাগরিকের এনআইডি ডাটাবেজটি সবসময় ঝুঁঁকিতে আছে। সাবেক আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালিম উদ্দীন খান যোগদান করে প্রথমে তথ্যভান্ডারের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। বিভিন্ন উৎস থেকে তিনি জানতে পারেন, তথ্যভান্ডারটি ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি সার্ভারের সোর্স কোডসহ সার্বিক বিষয় ১৫ দিনের মধ্যে তাকে বুঝিয়ে দিতে টাইগার আইটিকে নিদের্শনা দিয়েছিলেন। এটা তারিক সিদ্দিকের ইগোতে লাগায় তাকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পদ থেকে সরিয়ে সেনানিবাসে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর টাইগার আইটি আরও ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে।
সম্প্রতি ভোটার ডাটাবেজকে টাইগার আইটি থেকে পৃথক ও সুরক্ষিত রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এ কাজে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বুয়েট’ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে (সিএসই)।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে বিআরটিএর নানা প্রকল্পে টাইগার আইটি কাজ করছে কোনো প্রকার টেন্ডার ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই। টাইগার আইটির পক্ষে ক্ষমতাধর প্রভাবশালীদের তদবিরের কারণে কৌশলে বিভিন্ন টেন্ডারে অংশ নেওয়া দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়েছে মূল্যায়ন কমিটি। সরকারের কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তারিক ও তার স্ত্রী এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে। গণ অভ্যুত্থানের পর তারিক ও তার কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির তত্ত্ব বেরিয়ে আসছে। শেখ হাসিনার নিরাপত্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তারিক সিদ্দিক। সে সুযোগে তিনি এবং তার স্ত্রী সব জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করতেন। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ বণ্টন করার অবৈধ দায়িত্ব পালন করতেন তার স্ত্রী শাহনাজ।
আওয়ামী লীগ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করল তখন এ পরিবার নানা দিক দিয়ে সুবিধা অর্জন করে। সরকারের বিভিন্ন টেন্ডার নিজেদের অনুগত প্রতিষ্ঠানকে দিতেন তারিখ এবং তার স্ত্রী। এর ফলে তারা মোটা অঙ্কের কমিশন পেতেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত ফাঁসে এনটিএমসির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের সহযোগী ছিলেন টাইগার আইটির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান। সরকার পরিবর্তনের পর এনটিএমসির শীর্ষ কর্মকর্তারা আইনের আওতায় এলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন বিতর্কিত উদ্যোগের কোর টেকনিক্যাল সেবা দেওয়া টাইগার আইটির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান।
তারিক-শাহনাজ দম্পতির আশীর্বাদে টাইগার আইটি, আইবিসিএস-প্রাইমেক্স এবং কম্পিউটার সার্ভিস লিমিটেড (সিএসএল) যুক্ত হয় এনটিএমসির আড়ি পাতা প্রকল্পের কারিগরি উন্নয়নে। এ সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ যন্ত্রপাতি আমদানিতেও কমিশন নিতেন তারা। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, তারিক সিদ্দিকের প্রতাপে বছরের পর বছর বিআরটিএ নিয়ন্ত্রণ করেন টাইগার আইটির চেয়্যারম্যান জিয়াউর রহমান। নির্বাচন কমিশনের স্মার্টকার্ড মুদ্রণ সংক্রান্ত বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাংক টাইগার আইটিকে সাড়ে ৯ বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করে। আর প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানকে কালো তালিকাভুক্ত করে সাড়ে ছয় বছরের জন্য। কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় টাইগার আইটি ২০২৭ সাল ও জিয়াউর রহমান ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের কোনো টেন্ডারে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের প্রভাবে ১৩ বছর ধরে বিআরটিএ নিয়ন্ত্রণ করেছে টাইগার আইটি। এ সময়ে প্রভাব খাটিয়ে নতুন করে টেন্ডারের আয়োজনও বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্ব ব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করেছিল টাইগার আইটিকে। এরপর ২০১৯ সালে বিআরটিএ এর সঙ্গে তাদের চুক্তি বাতিল হলো। তার পরও সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রকল্পে কাজ পায় তারা।
নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট, ওয়াসার নানা প্রকল্পের কাজ নিজের পছন্দের কোম্পানিকে দিতেন তারিক। এভাবে প্রকল্প থেকে অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
প্রতিটি প্রকল্প যাকেই তারিক সিদ্দিক কাজ দিত, তার কাছ থেকেই ২০ শতাংশ করে কমিশন নিতেন তারিক সিদ্দিক। আর এ কারণেই তার নাম হয়ে গিয়েছিল ‘মিস্টার টোয়েন্টি পার্সেন্ট’।