Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রদর্শনীতে যুদ্ধাপরাধের  যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিতদের ছবি প্রদর্শনের জেরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েমকে নিয়ে বিতর্কিত স্লোগান দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু। বুধবার (৬ আগস্ট) এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।  

ওই যৌথ প্রতিবাদ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ প্রোগ্রামে কিছু বামপন্থি সংগঠন তাদের ধারাবাহিক মব সন্ত্রাসের আরেকটি ঘৃণ্য নজির স্থাপন করল। বাংলাদেশের বিভক্তি ও বিভাজনের রাজনীতি এবং ফ্যাসিবাদের পাটাতন নির্মাণকারী শাহবাগী বাম সন্ত্রাসীরা শান্তিপূর্ণ ও প্রশাসন অনুমোদিত কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তারা দলবদ্ধভাবে হামলা চালিয়ে ছাত্রশিবিরের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ এবং ক্যাম্পাসকে অশান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েমকে নিয়ে অযাচিতভাবে আপত্তিকর স্লোগান দিয়ে ব্যক্তিগত মর্যাদা ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার নিন্দনীয় অপচেষ্টা চালিয়েছে। আমরা তাদের এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

তারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে বামপন্থিদের জনবান্ধব রাজনৈতিক কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি নেই। বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচার, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ, আইনের শাসন এবং নিয়মতান্ত্রিক পন্থার বিপরীতে বস্ত্রপচা আদর্শের লালন, আধিপত্যবাদী ও ফ্যাসিস্টদের তোষণ, বিচারহীনতা ও মব সংস্কৃতি এবং গুম-খুন, গণহত্যার বৈধতা উৎপাদনই তাদের রাজনীতি।”

তারা আরও বলেন, তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়। ২০১৩ সালে এই গোষ্ঠী শাহবাগে মব তৈরি করে বিচারিক হত্যার পথ তৈরি করে দেয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক খালাসপ্রাপ্ত ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে মব সৃষ্টি করে দেশের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। শুধু তাই নয়, শাপলা গণহত্যা, প্রহসনের তিনটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ, গুম, খুন, দুর্নীতি, আয়নাঘর নির্মাণসহ যাবতীয় জুলুম ও বেআইনি কাজের বৈধতাদানকারী ও ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিল এই বামপন্থিরা। ফ্যাসিস্টদের ঐতিহাসিক সহযোগী হিসেবে চব্বিশের গণহত্যার দায়ও তারা এড়াতে পারে না।”

কেন্দ্রীয় দুই নেতা বলেন, আমরা মনে করি, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে দিল্লির আধিপত্য টিকিয়ে রাখা ও আওয়ামী গণহত্যাকে নরমালাইজ করার উদ্দেশ্যে পুনরায় বিভাজনের রাজনীতি সক্রিয় করতে চাইছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলছি, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে শাহবাগী বামপন্থিদের অপরাজনীতির অধ্যায় শেষ হয়েছে। বিভাজন ও ফ্যাসিবাদী বয়ান এখন ইতিহাসের জঞ্জাল ছাড়া কিছুই নয়। নতুন বাংলাদেশে সকল বিচারিক ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের ইতি টানতে হবে।”

বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রশিবির নেতারা সন্ত্রাস, দোষারোপ ও বিভাজন পরিহার করে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির চর্চার জন্য সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।