Image description

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে এবার খোঁজ মিলেছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরীর কোটি টাকার বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের। ২০২১ সালে কেনা এ সম্পত্তি নিয়ে উঠেছে অর্থ পাচারের অভিযোগ। এরই মধ্যে ব্রিটেনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন কোটি কোটি টাকার সম্পদ জব্দ হয়েছে। প্রক্রিয়া জটিল হলেও লন্ডনে পাচার হওয়া এসব অর্থ দেশে ফেরানো সম্ভব বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

লন্ডনে বাংলাদেশি অর্থ পাচারের অভিযোগে যাদের নাম শীর্ষে রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতায় সাবেক এই ভূমিমন্ত্রীর প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তি জব্দ করেছে ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ)। এসব সম্পদের অর্থের উৎস যাচাই প্রক্রিয়া চলছে। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা বলছেন প্রক্রিয়া জটিল হলেও পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরানো সম্ভব।

লন্ডনের প্রোপার্টি বিষয়ক আইনজীবী দেওয়ান মাহদি বলেন, ‘যে দেশ থেকে টাকাগুলো এসেছে, এরকম দৃষ্টান্ত আছে যে, সেই দেশে অর্থগুলো ফেরত গেছে। বাংলাদেশ চাইলে তাদের অপশনগুলো পারসিভ করতে পারে।’

এবার লন্ডনে অভিজাত এলাকায় খোঁজ মিলেছে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টের। সেখানকার অভিজাত এলাকার এজোয়ার রোডের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বের হয়েই চোখে পড়ে বহুতল আবাসিক ভবন। উত্তর লন্ডনের নিউক্যাসল প্লেসে অবস্থিত বিলাসবহুল ওয়েস্টমার্ক টাওয়ারে ‘বিটকম রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ নামের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই এ সম্পত্তি কেনা হয়।

সরকারি তথ্যানুযায়ী, এ রিয়েল এস্টেটের পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী ইমরানা জামান চৌধুরী। দু’জনেরই জাতীয়তা বাংলাদেশি হিসেবে উল্লেখ আছে। বিলাসবহুল এ অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের কঠোর শাস্তি রয়েছে।

দেওয়ান মাহদি বলেন, ‘অ্যাসেট যদি ধরা হয়, ঘরের মালিকানা, গাড়ি বা অন্য কিছু, ব্যাংক ব্যালেন্স যা এখানে মানি লন্ডারিং করা হয়েছে— যার সোর্সিং এবং ফান্ডিং কোনো লেজিটিমেট সোর্স থেকে না, তাহলে যেকারও ১৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে এবং আনলিমিটেড অ্যামাউন্টও ফাইন হতে পারে।’

ধারণা করা হয়, গত দেড় দশকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ১৮ লাখ কোটি টাকা। আমদানি রপ্তানিসহ নানা কায়দায় এসব অর্থ পাচার হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন সরকারের শাসনামলে সর্বোচ্চ রেকর্ড।

লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে গত ১৫ বছরে যে সম্পদ পাচার করা হয়েছে, সেই অর্থ বিদেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে, তা বিক্রি করে দেশের রিজার্ভে জমা দেবে।’

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির তথ্য বলছে, আওয়ামী সরকার আমলে বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ৭৫৩ কোটি ডলার বা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। পাচার হওয়া অর্থের অন্যতম শীর্ষ গন্তব্য ব্রিটেন।