Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শরীয়তপুর জেলা সমন্বয় কমিটির দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা নিজেদের ফেসবুক পেজে আবেগঘন বার্তা দিয়ে হঠাৎ করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে এ ঘোষণা প্রকাশ্যে আসতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় ব্যাপক গুঞ্জন।

পদত্যাগকারীরা হলেন- জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম এবং সদস্য মো. পলাশ খান। দুজনেই দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির শরীয়তপুর জেলা পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে পরিচিত এ দুই নেতার এমন আকস্মিক বিদায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে।

 

অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ব্যক্তিগত কারণেই আমি এনসিপির সব ধরনের দায়িত্ব ও কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। সবাই আমার পাশে ছিলেন, কৃতজ্ঞতা জানাই।

অপরদিকে, পলাশ খান তার স্ট্যাটাসে লেখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির শরীয়তপুর জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছি। এটি একটি আবেগঘন সিদ্ধান্ত। তবে সময় এসেছে কিছু বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার।

 

পদত্যাগের পেছনের কারণ সম্পর্কে পলাশ খান বলেন, এনসিপি আমার জন্য শুধু রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নয়, এটা আমার আবেগের জায়গা। কিন্তু জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কোনো আলোচনার সুযোগ রাখা হয়নি। মাত্র ২-১ জনের ইচ্ছায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে, সে আপত্তি থেকেই এই অব্যাহতি।

তিনি আরও বলেন, আমি চাই এনসিপি সত্যিকার অর্থেই একটি বিকল্প ও গঠনমূলক রাজনীতির মঞ্চ হয়ে উঠুক। যে রাজনীতিতে থাকবে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও অংশগ্রহণমূলক নেতৃত্ব। ব্যক্তিগতভাবে আমি এখনো এই রাজনৈতিক দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

পদত্যাগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এনসিপি শরীয়তপুর জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন বলেন, আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের পদত্যাগের পোস্ট দেখেছি। তবে দলীয় নিয়ম অনুযায়ী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়াই হঠাৎ এমন ঘোষণা কিছুটা বিস্ময়কর।

স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, দলের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ, সমন্বয়হীনতা ও নেতৃত্বে আস্থার সংকট থেকেই এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই মনে করছেন, বিষয়টি ভবিষ্যতে এনসিপির জেলা পর্যায়ের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এখন দেখার বিষয়, এই পদত্যাগের প্রেক্ষিতে জেলা কমিটির ভেতরে কোনো পুনর্গঠন বা দলীয় আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয় কি না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপের ওপরই নির্ভর করছে এনসিপির স্থানীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতি।