
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড শাপলা চত্বরে হয়েছে। সেদিন নিহত অনেকের তালিকা এখনো হয়নি। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি।
আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিববুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই কথা বলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে ফ্যাসিস্ট হটাও আন্দোলনে হেফাজতে ইসলাম নেতৃত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কিছুদিন আগে শাপলা চত্বরে শহীদদের স্মরণে স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেও অনেকের নাম নেই। অনেক লাশের কবরের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ ও পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের আমির আমাদের মুরব্বির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছি। তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছি। এখানে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই। কারণ, ফ্যাসিস্ট হটাও আন্দোলনে তাদের অবদান রয়েছে।’
বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন—সবার সঙ্গে বিএনপি যোগাযোগ রাখবে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে গণতন্ত্রের স্বার্থে ফ্যাসিস্টবিরোধীদের সঙ্গে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। এটি রাজনৈতিক আর অরাজনৈতিক যেকোনো সংগঠনের সঙ্গে হতে পারে। এই ঐক্যকে শক্তিতে রূপান্তর করে ভবিষ্যতেও ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে কাজ করতে হবে।
আগামী নির্বাচনে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা আছে কি না, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন। তবে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে থাকা কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা করব।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মো. হেলাল উদ্দিন, ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজিম উল্লাহ বাহার, উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির নেতা সারোয়ার আলমগীর, নূর মোহাম্মদ প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুমার নামাজ আদায় করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমদ। মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাসেমী ও প্রধান শাইখুল হাদিস শেখ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
পরে তাঁরা সেখানে হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন।
বিএনপির নেতাদের আগে গত ২০ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ সমাবেশে চট্টগ্রামে এলে হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা। নাহিদ ইসলাম ছাড়াও মাদ্রাসায় সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ প্রমুখ। নেতা-কর্মীরা হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন।