
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের ওপেন হার্ট সার্জারি হবে শনিবার (০২ আগস্ট)। তার হার্টে ৫/৬টি ব্লক ধরা পড়েছে। তার মধ্যে তিনটি আর্টারির প্রায় ৮৫ ভাগ ব্লক। এরই মধ্যে তাকে গত বুধবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে রাজধারী মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। জামায়াত আমিরের শারীরিক অবস্থা জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এ সময় জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান আকন্দ, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সেলিম উদ্দিন, নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় জামায়াতের আমির অসুস্থ হন। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় পড়ে যান। একপর্যায়ে বসে থেকেই বক্তব্য শেষ করেন। সেই থেকে তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। আমরা সেদিনই তাৎক্ষণিকভাবে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। ডাক্তাররা জানান প্রচণ্ড গরমের কারণে তার পানি স্বল্পতা (ডিহাইড্রেশন) দেখা দেয়।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ৩০ জুলাই ইউনাইটেড হাসপাতালে জামায়াত আমিরের এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। তার হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। ডাক্তররা বলেছেন, তিনি এখনো ভালো আছেন। তিনটি আর্টারিতে প্রায় ৮৫ ভাগ ব্লকসহ ৫/৬টি ব্লক ধরা পড়েছে। আল্লাহর মেহেরবানিতে তিনি সুস্থ আছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে আমরা রিং পরানোর উদ্যোগ নিই। পরবর্তীতে অভিজ্ঞ ডাক্তাররা দেখলেন যে, রিং পরানোর চেয়ে ওপেন হার্ট সার্জারি করাটাই ভালো। আমরা দলীয়ভাবে এবং তার পরিবার এই ওপেন হার্ট সার্জারির বিষয়ে সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছে। পাশাপাশি তার বয়স বিবেচনায় অনেকেই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু জামায়াত আমির দেশের হার্টের চিকিৎসায় আস্থাশীল। তিনি বিদেশে যেতে সম্মত হননি। তাছাড়া তিনি একটি দলের প্রধান, তার সুনাম ও সম্মান আছে। সেজন্যই তিনি বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে সম্মত হননি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে শনিবার সকাল সাতটার দিকে একটি চিকিৎসক টিমের সমন্বয়ে জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি হবে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, সেনা প্রধানসহ অসংখ্য দলের শীর্ষ নেতারা জামায়াত আমিরের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। অনেক ভিজিটর হাসপাতালে ভিড় করছেন। তবে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, সুচিকিৎসার সুবিধার্থে মোবাইলে কথা বলা ও কারো সাক্ষাৎ দেওয়া বন্ধ রাখা দরকার। পরবর্তীতে আমরা দলীয়ভাবে নির্বাহী পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। জামায়াত আমিরের সুস্থতার জন্য আমরা দেশ-বিদেশের সব শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।