Image description

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, র‌্যাংকিং পদ্ধতি নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে চায় বিএনপি। সাংবিধানিক সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ হতে হবে নির্বাহী আইনে। সংসদে নারী সংরক্ষিত আসনের পক্ষে বিএনপি। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্যে কমিশনের দ্বিতীয় দফার ২১তম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

 
 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নীতিগতভাবে আমরা সবাই একমত। তবে গঠন পদ্ধতি নিয়ে কিছুটা মতভেদ রয়েছে। কমিশনসহ বিভিন্ন দলের পক্ষে একটি বাছাই কমিটির কথা হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার থাকবেন। তাতে সিদ্ধান্ত না হলেও ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল ৫ জন করে ১০ জন ও অন্যান্য দল ২ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। এর মধ্যে চারজন প্রস্তাব করলে হবে। আর এখানেও সমাধান না হলে র‌্যাংকিং পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা এ জায়গায় একমত হতে পারিনি। আমরা চাই, এটি সর্বশেষ অপশন হিসেবে সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হোক। সংসদে আলোচনা হবে। এ নিয়ে নাগরিকরা মতামত দিতে পারবেন। সভা-সেমিনার হবে। সেখানেও সমাধান না হলে আমরা ত্রয়োদশ সংশোধনীর পক্ষে। তবে এক্ষেত্রে সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের সুযোগ থাকবে না।

চার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নির্বাহী আইনের পক্ষে মত দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় না বিএনপি। তিনি বলেন, সংবিধানকে আমরা আর ভারী করতে চাই না। আমরা মনে করি, আইনিভাবে হলে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সবকিছু বাছাই করতে গেলে দেখা গেল সংবিধান সংশোধন করা যাবে না। এতে করে অনেক কাজ সহজে করা যাবে না। আমরা নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সে নিয়ে আসতে চাই। এতে এক প্রতিষ্ঠান আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রতি নাক গলাতে পারবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে আমরা। তাই এর নিয়োগ সাংবিধানিকভাবে করার পক্ষে বিএনপি।

জুলাই সনদের খসড়াকে বিএনপি ইতিবাচকভাবে দেখছে জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই সনদের খসড়ায় যে অঙ্গীকারের বিষয়ে বলা হয়েছে, আমরা একমত সেখানে। কোনো ভাষা বা শব্দগত সংশোধনী থাকলে আমরা দেবো। আর দুই বছরের বাস্তবায়নের বিষয়েও বিএনপি একমত।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দশ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারবেন না। সে প্রস্তাব প্রথম আমরা দিয়েছি। এত কিছুর পর স্বৈরাচারী শাসন কায়েম হবে তা মনে হয় না। এটি সবাই মেনে নিয়েছি। তাই আমরা সব বিষয়ে দ্বিমত সেটা বলা ঠিক নয়।

তিনি বলেন, আমরা চাই সাংবিধানিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন করতে। আমরা নারীদের সংরক্ষিত আসনের পক্ষে। এক্ষেত্রে ১০০ আসন করার প্রস্তাব দিয়েছি। তবে তা আনুপাতিক হারে আগের মতো হতে হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেকে সরাসরি নির্বাচন করার কথা বলেছে। আমরা মনে করি, আমাদের দেশের বাস্তবতায় নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও আমরা বলেছি, ৩০০ আসনের মধ্যে এবার ৫ ও আগামীতে ১০ শতাংশ নারীকে মনোনয়ন দেওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে ও ২০০৫ সালে ন্যায়পাল করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। জাতীয় সনদে ন্যায়পালের কথা থাকতে হবে। এর আইন ও কার্যকরী করা নিয়ে বিস্তারিত থাকতে হবে। এর জন্য সচিবালয় করতে হবে। সেটিও আইনের মাধ্যমে করতে হবে।

ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, এলডিপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।