
অর্ধশত ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ ওঠা নারায়ণগঞ্জের ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাক মিয়ার চার দিন রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মিনহাজুর রহমান তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, আসামির ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন রয়েছে। এসব টাকার উৎস কী, সেটি জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন।
রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, “আসামির বিরুদ্ধে ১৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেন পেয়েছি। এর মধ্যে এক কোটি টাকার ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও বিচার হবে৷
“যদি তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ না পাওয়া যায়, তাহলে শুধু জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলা চলবে। তিনি ঘুষ, দুর্নীতি করেছেন সেটা জানতেই জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। তার বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অথচ গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ৩ কোটি টাকা।”
আসামিপক্ষে লাক মিয়ার আইনজীবী মোবারক হোসেন রিমান্ড বাতিলের আবেদনে বলেন, “১৯৯০ সাল থেকে লাক মিয়া ব্যবসা করেন৷ উনি ২০১১ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার বাবার পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে।
“১৯৯০ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকলে এনবিআর মামলা করত। রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, তাহলে জেলগেটে পর্যাপ্ত সুযোগ আছে। তার হার্টে পাঁচটি রিং পড়ানো হয়েছে৷ তিনি পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। নিয়মিত সরকারের কর দিয়ে যাচ্ছেন।”
এরপর বিচারক বলেন, আসামি ও রাষ্ট্রের উভয়ের স্বার্থে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারের ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাক মিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৬ মার্চ মামলা করে দুদক। এজাহারে তার বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার ৪৯ ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথা বলছে দুদক।
তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধেও ১৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছে সংস্থাটি। এ মামলায় লাক মিয়াকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার আগে গত ১৪ জানুয়ারি লাক মিয়ার ১৯২টি স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ১৮টি ব্যাংক অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত।