Image description

শরীয়তপুরের নড়িয়া থানায় পুলিশ সদস্যদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড যেন পিছু ছাড়ছে না। থানার এক পরিদর্শক (তদন্ত) উপজেলা বিএনপির এক নেতার গলায় মালা পরানো নিয়ে সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিতর্ক উঠেছে সোহেল রানা নামে এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে তাকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বসে পক্ষ-বিপক্ষের সমস্যার সমাধানে সালিশ করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার নড়িয়া উপজেলার চামটা ইউনিয়নের গুলমাইজা এলাকায় একটি মামলার তদন্তে যান নড়িয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা। এরপর তিনি সেখানে ইউনিয়ন বিএনপির ক্লাবে নেতাদের মাঝখানে বসে ছবি তোলেন। ছবিতে তার ডান পাশে বসা থাকতে দেখা যায় চামটা ইউনিয়ন বিএনপির প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী খান ও কনস্টেবল সুলতানকে। আর তার বামে বসা যুবদল নেতা আল আমিন ছৈয়াল ও দ্বিন ইসলাম ছৈয়াল।

ছবিটি গত ২৫ এপ্রিল তোলা হয় এবং পরে ‘আল আমিন ছৈয়াল’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়। যদিও প্রথমে বিষয়টি নজরে না এলেও ১৩ জুলাই একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান রিপনের গলায় নিজ হাতে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। সেই মুহূর্তের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ১৬ জুলাই তাকে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এরপরই এএসআই সোহেল রানার ছবিটিও স্থানীয়রা নতুন করে শেয়ার দিতে শুরু করেন। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হতে দেখা যাচ্ছে।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে বসলে সেখানে নিরপেক্ষতা বজায় নাও থাকতে পারে, যা প্রশ্নবিদ্ধ বটে।

 

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শরীয়তপুর জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ২৪ পরবর্তী অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে আমরা দলীয় লেজুড়বৃত্তি, দলের দাস, এমনকি কোনো দলের আধিপত্য বা তেলবাজি করবে এমন পুলিশ সদস্য চাই না। পুলিশকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। আমরা সবসময় চাই পুলিশের স্বাধীন কমিশন থাকবে। পুলিশ শুধুমাত্র জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে এবং তাদের সেবা দিবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, তিন মাস আগে আমি ওই এলাকায় একটি জমিজমার মামলার তদন্তে যাই। বাদী ছিলেন ছত্তার খাঁ ও আসামি ছিলেন শাজাহান খাঁ। পরে বাদীপক্ষ ও বিবাদীপক্ষের অনুরোধে ওই বিএনপির ক্লাবে গিয়ে বসে কথা বলেছি। কিন্তু কোনো দলীয় কথাবার্তা হয়নি। তিন মাস আগের ঘটনা এখন নতুন করে তুলে ধরার মানে এটা ষড়যন্ত্র।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, আমরা বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ নেব। যদি এটি পুলিশের শৃঙ্খলা পরিপন্থি হয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।